রাজশাহীতে তৈরি হচ্ছে ব্যাটারিচালিত মোটরসাইকেল। শুধু মোটরসাইকলে নয়, ওই কারখানায় মোটরসাইকেলের পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান, সাইকেলও তৈরি হচ্ছে। রাজশাহীতে ভদ্রা মোড়ে সেরিকালচার ভবনের সামনে অবস্থিত ‘শাহ মখদুম অটো এন্টারপ্রাইজ’ নামে কারখানায় এসব যানবাহন তৈরি হচ্ছে। সদরুল আমিন মিলন নামে এক ব্যক্তি ওই কারখানার মালিক।
সারাদেশে যখন মেয়াদ উত্তীর্ণ মিশুক, বেবিট্যাক্সি, টেম্পুর পরিবেশ ও শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ। এমন সময় ২০০৯ সালে বাংলাদেশে আমদানী হতে থাকে ব্যটারিচালিত অটোরিকশা যা জিপসী বা বোরাক গাড়ী নামে পরিচিত। পরিবেশবান্ধব ও ব্যাটারীচালিত এই যানবাহনগুলো ক্রমেই জনপ্রিয় হতে থাকে। তখন অনেকে সরাসরি চীন থেকে অটোরিকশা কিনে এনে এইদেশে বাজারজাত শুরু করেন। ওই সময় সদরুল আমিন মিলন ছিলেন বেকার। ঢাকায় অনেক কষ্টে একটি কোম্পানিতে চাকুরি জোগাড় করেন তিনি। তবে মন বসে না। ফিরে আসেন রাজশাহীতে।
এসময় শাহ মখদুম অটো এন্টারপ্রাইজের মালিক সদরুল আমিন মিলনের মাথায় নতুন চিন্তা আসে। দেশেই কম খরচে ব্যটারিচালিত অটোরিকশা উৎপাদন করবেন। শুধুমাত্র ইলেকট্রিক মোটর ও ব্যাটারি বাইরে থেকে কিনে এনে কারখানার নিজস্ব মেশিনে অটোরিকসার বডি তৈরি তৈরি করে যাবতীয় ফিটিং সম্পন্ন করে তৈরি করা হয়।
সদরুল আমিন মিলন জানান, প্রতিটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকসা যা চীনের তৈরি ব্যাটারিচালিত অটোরিকসার চাইতে মজবুত ও সাশ্রয়ী।
সদরুল আমিন মিলন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। রাজশাহীর একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইন ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশের পর তিনি চাকুরির পেছনে না ছুটে নিজের মেধা ও সৃজনশীলতা কে কাজে লাগিয়ে রাজশাহীতে ব্যটারিচালিত যানবাহন তৈরির কারখানা স্থাপন করেন।
তার কারখানায় উৎপাদিত সবচেয়ে আকর্ষণীয় পণ্য হলো ব্যাটারিচালিত মোটরসাইকেল। একেবারে স্টাইলিশ ডিজাইন।
সদরুল আমিন মিলন দাবি করেন, তার তৈরি মোটরসাইকেলগুলো একবার চার্জ দিলে ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার চলে। সম্পূর্ণ দেশে তৈরি এই বাইকগুলোর দাম অনেক কম। বাজার বিক্রি করা হয় ৫৫ হাজার টাকায়। অটোরিকশা ৭০ থেকে ৭৫ হাজার, সাইকেল ২০ হাজার টাকা।
মোটরসাইকেল তৈরির বয়স ৩ থেকে ৪ বছর। কেউ অর্ডার দিলে তারা তা বানিয়ে দেন। মোটরবাইকের প্রতি চার্জে খরচ মাত্র ১০ থেকে ১২ টাকা।
সদরুল আমিন মিলন জানান, দেশেই যদি ব্যাটারিচালিত যানবাহনের জন্য উচ্চগতির ইলেকট্রিক মোটর তৈরি করতে পারি তাহলে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের দাম অনেক কমে যাবে তখন চীন থেকে মোটর আমদানি করতে হবে না।
তিনি বলেন, ব্যবসা চালাতে গিয়ে অনুমতিসহ নানান প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন তিনি। সঠিকভাবে পৃষ্টপোষকতা পেলে তিনি এ ব্যবসাকে আরো বেশি প্রসার ঘটাতে পারতেন।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন