রাজশাহী কলেজের মূল ফটক দিয়ে বাইরে বেরোলেই ডানদিকের প্রাচীর ঘেঁষা ড্রেন চলে গেছে কলিজিয়েট স্কুল পর্যন্ত। এই ড্রেনের কথা কাউকে মনে করিয়ে দিতে হবে না। কারন এর বিশেষত্ত্ব হলো মনুষ্য ও পশুপাখির মলমূত্রের দুর্গন্ধ। রাজশাহী কলেজের প্রায় সকল শিক্ষার্থীই এই ড্রেনের দুর্গন্ধের সঙ্গে পরিচিত। নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান রাজশাহী কলেজের। আর তাই লোকচক্ষুর আড়ালে কলেজের বাইরের এই ড্রেনেই মলমূত্র ত্যাগ করে থাকে কান্ডজ্ঞানহীনরা। ফলে রাজশাহী কলেজের ভেতরের পরিবেশ মনোমুগ্ধকর হলেও অস্বাস্থ্যকর ছিল কলেজের বাইরের পরিবেশটা।
এর আগে নিয়ে বেশ কয়েকবার কলেজ প্রশাসন, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এটা পরিচ্ছন্ন রাখার উদ্যোগ নিলে ফলপ্রসু কিছুই হয়নি। তাই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে স্বয়ং অধ্যক্ষই এই ড্রেন সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছেন। বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই ড্রেন সংস্কার, স্লাব, টাইলস লাগানো, ফুলের টব বসানোসহ দেয়ালে বুদ্ধিজীবিদের ছবি সাটানোর ব্যবস্থা করছেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান। যাতে করে ড্রেনটি আর কেউ অপরিচ্ছন্ন না করতে পারেন। স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে তিনি সার্বক্ষণিক এ ড্রেন সংস্কারের কাজ তত্ত্বাবধান করছেন। এছাড়াও রাতে ও ভোরে স্থানটি পাহারার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের।
এর আগে শুধু রাজশাহী কলেজের প্রাচীর সংলগ্ন ড্রেন পরিষ্কার ও সংস্কারের কাজ করলেও শনিবার কলেজিয়েট স্কুলের সামনে যে সকল অস্থায়ী দোকান ও নোংরা পরিবেশ সৃষ্টিকারী দোকান ছিল সেগুলোকে অপসারণ করেন তিনি। এছাড়াও এর সংস্কার করতে নিজে উপস্থিত থেকে কাজের তদারকি করেন অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান বলেন, রাজশাহী কলেজ ও কলেজিয়েট স্কুল গেটের সামনের ড্রেনসহ সংলগ্ন স্থানটির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সর্বসাধারণ ও বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছিল। যা কলেজিয়েট স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ সকল পথচারির স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহী কলেজ কর্তৃপক্ষ স্থানটির স্বাস্থ্যকর পরিবেশ পুনরুদ্ধার ও স্থায়ী টেকসই সুন্দর পরিবেশ রক্ষায় ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। কাজ চলাকালীন ও সমাপ্তির পর স্থানটির সৌন্দর্য এবং পরিবেশ যেন অক্ষুণ্ন থাকে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যক্ষ বলেন, এখন যেখান থেকে প্রস্রাবের দুর্গন্ধ আসছে আর কয়েক দিন পর সেখান থেকেই আসবে ফুলের সৌরভ। এর আগে কলেজের সামনের মূল রাস্তার ড্রেনের উপর ঢালাই স্ল্যাব বসানো হয়।
কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী রুমা খাতুন বলেন, প্রস্রাবের দুর্গন্ধে নাক-মুখ চেপে বাজার থেকে কলেজে আসতে হয়। অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। এখন আর সেই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে না। স্থানটির সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কাজ করায় কলেজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদও জানান তিনি।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন