বহুল প্রত্যাশিত রাজশাহী-ঢাকা বিরতিহীন ট্রেন বনলতা এক্সপ্রেসে ভ্রমণ করলেই যাত্রীদের দেয়া হবে খাবার। এই খাবারের মূল্য হবে ১৮০ টাকা। আপাতদৃষ্টিতে এই খাবার সৌজন্যমূলক বলা হলেও ট্রেনের ভাড়ার সঙ্গে সমপরিমাণ অর্থ যোগ করে টিকিটের মূল্য নির্ধারিত হবে। তবে আগামী ২৫ এপ্রিল উদ্বোধনের দিন নির্ধারিত হলেও টিকিটের মূল্য তালিকা এখনও চূড়ান্ত করতে পারেনি রেলওয়ে।
বনলতার উদ্বোধন ঘিরে ব্যস্ত রেলের বিভিন্ন বিভাগ। এরই মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা ১২টি ট্রেনের বগি বুঝে পেয়েছে ঈশ্বরদী ক্যারেজ এন্ড ওয়াগন বিভাগ। বগিগুলোর পরীক্ষামূলক চলাচল, জ্বালানী, বিদ্যুৎসংযোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করেছেন তারা।
ওয়াগন বিভাগ সূত্র জানায়, ট্রেনটিতে সংযুক্ত রয়েছে উড়োজাহাজের মতো বায়োটয়লেট। এ কারণে মলমূত্র আর রেললাইনের ওপরে পড়বে না। ট্রেনটিতে থাকছে রিক্লেনার চেয়ার। আছে ওয়াইফাই সুবিধা। প্রতিটি বগিতে রয়েছে এলইডি ডিসপ্লে।
যার মাধ্যমে স্টেশন ও ভ্রমণের তথ্য প্রদর্শন করা হবে। কিন্তু থাকছে না শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোনো ধরনের স্লিপিং বার্থ। রেল বিভাগের ভাষ্য, যেহেতু ট্রেনটি দিনের বেলা চলাচল করবে সে কারণে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বার্থের দরকার পড়ছে না আপাতত ।
ঈশ্বরদীতে অবস্থিত রেলের ক্যারেজ এন্ড ওয়াগন বিভাগের ইনর্চাজ একেএম গোলাম হাক্কানি জানান, নতুন ট্রেনের মোট বগির সংখ্যা ১২টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ারের বগি ৭টি, যার আসন সংখ্যা ৬৬৪টি।
এসি বগি ২টি, আসন সংখ্যা ১৬০টি। একটি পাওয়ার কার’র আসন সংখ্যা ১৬টি। দু’টি গার্ডব্রেকের আসন সংখ্যা ১০৮টি। ট্রেনটিতে থাকছে একটি খাওয়ার বগি। মোট আসন সংখ্যা ৯৪৮টি।
বনলতা এক্সপ্রেসের বগি নতুন হলেও ইঞ্জিন পুরাতন। ২০১৩ সালে ভারত থেকে আমদানি করা দুটি ইঞ্জিন দিয়ে চলাচল করবে ট্রেনটি। ঘন্টায় ট্রেনটির সর্ব্বোচ্চ গতিবেগ ৯০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার।
রেলের ডিজেল ও লোকমোটিভ বিভাগে ঈশ্বরদীতে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইনচার্জ আবু উসমান জানান, বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের যে ইঞ্জিন দুটি ব্যবহৃত হবে সেগুলো সৈয়দপুর রেল কারখানায় রয়েছে। সোমবার ঈশ্বরদী জংশনে পৌছুবে। ভারত থেকে আনা এই ইঞ্জিনগুলো খুবই ভালো মানের।
বগি এবং ইঞ্জিনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হলেও এখন অবধি নির্ধারিত হয়নি টিকিটের মুল্য। রেল বিভাগের ধারনা টিকিটের আগের দামের তুলনায় ১০ শতাংশ বাড়তে পারে। আর ২৫ এপ্রিল উদ্বোধন হলেও বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হবে ২৭ এপ্রিল থেকে।
রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল অফিসের তথ্যমতে, সরকারি একটি সংস্থার সহযোগী প্রতিষ্ঠান খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) খোন্দকার শহিদুল ইসলাম জানান, টিকিটের দাম নির্ধারণের কোনো সিদ্ধান্ত অফিসিয়ালি তারা জানেন না।
দুএকদিনের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। তবে যাত্রীদের খাবার প্যাকেট দেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকজন কর্মকতা খাবার খেয়ে দেখেছেন। দাম অনুযায়ী খাবারের মান ভালো।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ The Bangladesh Today