রাজশাহীতে মৌসুমের প্রথম পাকা আম (গুটিজাতের) বাজারে আসছে আজ বুধবার। কয়েকদিন আগে জেলা প্রশাসন থেকে আম নামানোর তারিখ ঘোষণার পর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে তার আগে সোমবার দিবাগত রাতের ঝড়ে ঝরে পড়েছে বিপুল পরিমান আম। বিশেষ করে জেলার আম প্রধান চারঘাট-বাঘা উপজেলায় কালবৈশাখীর তান্ডবে এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকরি ফসল আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যারা বাগান চুক্তি করে অগ্রীম আম ক্রয় করেছেন তাঁরা এই মুহুর্তে চরম হতাশা ও উৎকন্ঠায় রয়েছেন।
রাজশাহীর এই দুই উপজেলায় এমনিতেই তুলনামুলকভাবে আমের উৎপাদন কম। তার উপর রাতের ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম এলাকার আম ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান বলেন, এবার লিজ নিয়ে আমের চাষ করেছি। ঝড়ে বাগানে যে পরিমান আম পড়েছে তার ক্ষতি অপুরনীয় । এ ঝড় না হলে সঠিক সময়ে প্রায় ৫ লাখ টাকার আম বিক্রি হতো। তবে তার বাগানে গড়ে প্রায় ৫ শতাংশের মতো আম ঝড়ে গেছে বলে জানান তিনি। একই কথা বলেন আমোদপুর গ্রামের বাগান মালিক আকবর আলী । তাঁর মতে, উপজেলার কৃষকরা শুধু আম বিক্রি করে প্রতি বছর অর্থ উপার্জন করেন ৬ থেকে ৭ শ কোটি টাকা।
বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লা সুলতান জানান, আমের জন্য অল্টানেটিক ডিয়ার (বছর) ভ্যারি করে। অর্থাৎ এক বছর ভাল আম হলে অন্য বছর এমনি কম হয়। এ দিক থেকে পরপর দুই বছর দেশে প্রচুর পরিমান আম উৎপাদন হওয়ায় এবার আম কম হয়েছে। তিনি বলেন, এবার উৎপাদন কম হওয়ায় দাম ভাল পাওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, বাঘায় ৮ হাজার ৩৬৮ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। তবে এ বছর বাগানে আম কম থাকায় উৎপাদন ধরা হয়েছে হেক্টর প্রতি ৬ থেকে ৭ মেট্্িরক টন। তবে সোমবার রাতের কালবৈশাখী তান্ডবে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগ দাবি করছেন, বিভিন্ন বাগানে ১ শতাংশের বেশি আম ঝড়ে গেছে। আর চাষিরা দাবি করেছেন ৫ শতাংশের বেশি আম ঝড়ে গেছে। সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে বাঘা ও চারঘাট উপজেলায় প্রায় ২৫ কোটি টাকার আম ঝরে গেছে একরাতের ঝড়ে। ঝড়ে পড়া এসব আম মঙ্গলবার বাজারে বিক্রি হয়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের আম পাড়া শুরু হবে আজ বুধবার থেকে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ থেকে গুটি আম পাড়া যাবে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্য আম পাড়া যাবে। এর মধ্যে গোপালভোগ ২০ মে, হিমসাগর বা ক্ষীরসাপাত ২৮ মে, লক্ষণভোগ ২৫ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ১৬ জুন, ফজলি ও সুরমা ফজলি ১৬ জুন এবং আশ্বিনা আম পাড়া যাবে ১ জুলাই থেকে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine