স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে বুধবার থেকে সবধণের গুটি আম রাজশাহীর বিভিন্ন বাগান থেকে নামান শুরু হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বাজারগুলোতে সে ভাবে আম চোখে পড়ছে না। আমের আড়তগুলোতে যে আম পওয়া যাচ্ছে সেগুলোর দাম মণ প্রতি ১২’শ থেকে ১৩’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আম চার্ষী ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, প্রথম দিনেই এক সাথে বাজারে সব আম ছাড়তে চাইছে না তারা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এতে করে আমের দাম পড়ে যেতে পারে। সেই সাথে ধান কাটার মৌসুম হওয়ায় রয়েছে আম নামানো শ্রমিকের সংকট।
রাজশাহী জেলার চারঘাট, বাঘা, পুঠিয়া, দুর্গাপু ও বাগমারা উপজেলার বাগানগুলোতে সকাল থেকে আম নামাতে দেখা গেছে। স্বদলবলে ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম হাতে বাগগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশে আম পাড়া হচ্ছে। বড়-বড় খাঁচায় সেই আম ভর্তি করে ভ্যানে বা ভুটভুটিতে চড়িয়ে স্থানীয় আমের আড়তগুলোতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিকে সকাল থেকে আম নামানো শুরু হলেও স্থানীয় বাজার গুলোতে এখন পর্যন্ত আম বিক্রি হতে দেয়া যায়নি। ব্যবসায়ীরা বলছেন নামান শেষে হলে বিকাল থেকে বাজারগুলোতে সরবরাহ করা হবে। তবে এক সাথে বাজারে সব আম নামান হলে আমের দাম কমে যেতে পারে এই আশঙ্কায় অনেকেই এখনো বাগান থেকে আম নামানো শুরু করেনি। তারা বাজর মূল্য দেখে আম নামানোর সিদ্ধান্ত নিবে।
বানেশ^রের একটি আম বাগানের মালিক রহমত মোল্লা বলেন, গত ৫বছর থেকে সরকার বিভিন্ন জাতের আম নামানোর জন্য তারিখ ঠিক করে দিচ্ছেন। এতে সানান্য কিছু অনুবিধা হলেও সার্বিক দিক বিবেচনায় আম চাষিদের সুবিধা হয়েছে।
আম চাষি সুবেদানর মন্ডলের ৮৫টি গাছ নিয়ে একটা আম বাগান রয়েছে। তিনি বলেন, এখনই বাগান থেকে সব আম নামাবো না। আগে বাজার দেখবো তার পর ধিরে ধিরে নামাবো। কারণ একত্রে বাজারে সব বাগানের আম আসলে দাম পড়ে যাবে। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
আর চারঘাটের আম চাষি হাকিম মতবর বলেন, এবার আম নামানোর শ্রমিক কম। যারা আছে তারা বেশি পারিশ্রমিক চাচ্ছে। তাছাড়া আজ আম নামানোর প্রথম দিন হওয়ায় চাপ একটু বেশি। সেই সাথে এখন ধান কাটার মৌসুম হওয়ায় অনেক শ্রমিক ধান কাটতে গেছে। তবে ধিরে ধিরে শ্রমিক বাড়বে। আশকরি তখন সমস্যা হবে না।
বানেশ^র হাটের আম ব্যবসায়ী মান্নান বলেন, গতবার আমে ব্যবসায়ীরা লস করেছে। এবার ব্যবসায়ীরা আমেরে বাজারে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। তারা বাজার দেখে আম তুলছে। আজ যেহেতু প্রথম দিন। তাই আজ থেকেই হিসাব শুরু হবে। রাজশাহীর বারের চাহিদা ও স্থানীয়দের চাহিদা দেখে আমের দাম ওঠা নামা করে।
তিনি আরো জানান, এবার ঈদের পরে ভালো জাতের চাহিদা সম্পন্ন আম গুলো নামছে। তাই আশা করা হচ্ছে ব্যবসায়ীরা গেলবারের মতো অতোটা লস করবে না।
এদিকে বিষ মুক্ত আমের বাজার নিশ্চিত করতে রাজশাহী জেলা প্রশাসক গেল রবিবার স্থানীয় বাগানগুলো থেকে সব জাতের আম নামানোর তারিখ ঠিন করে দিয়েছিলেন। নির্দেশনা অনুসারে গুটি আম ১৫ মে, গোপাল ভোগ আম ২০মে, রাণী পছন্দ ২৫ মে, ক্ষিরশাপাত ও হিম সাগর ২৮ মে, লক্ষণ ভোগ ও লক্ষণা ২৫ মে, লেংরা ৬জুন, আমরোপালী ১৬জুন, ফজলী ১৬ জুন ও আশিনা আম ১৭ জুলাই নামানো যাবে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine