পোষাকের সাথে সামজ্ঞস্য রেখে জুতা-স্যান্ডেল পরা রুচিশীল ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। আর তাই ঈদের পোষাকের সাথে মিল রেখে জুতা-স্যান্ডেল কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। ঈদকে ঘিরে পোষাকের পাশাপাশি নগরীতে জমে উঠেছে জুতা-স্যান্ডেলের বেচাকেনা। পোষাকের সাথে মিলিয়ে বিভিন্ন ধরনের জুতা-স্যান্ডেল কিনছেন ক্রেতারা। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পাশাপাশি ভিড় রয়েছে মুচির দোকানে। অনেকেই সাইজ, ডিজাইন ও রুচি অনুযায়ী বানিয়ে নিচ্ছেন জুতা ও স্যান্ডেল।
প্রতিবছরের মত এবছরও বাজারে রয়েছে বিভিন্ন নামধারী জুতা-স্যান্ডেল। গতবছর আর্জেন্টিনা, রেস-থ্রি, বাহুবলী-২, রেস-থ্রি, ক্যান্ডেল, গ্যাম্বল, ফিলা, ক্যাঙ্গারু নামক জুতা-স্যান্ডেলের বিশেষ চাহিদা ছিল বাজারে। সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকার মধ্যেই বিক্রি হয়েছিল এসকল জুতা-স্যান্ডেলগুলো।
এবছরও ভারতীয় পোষাকের নামের সাথে মিল রেখে রাজশাহীর বাজারে এসেছে বিভিন্ন নামধারী স্যান্ডেল। মেয়েরা পোষাক কেনার পর পোষাকের সাথে মিল রেখে কিনছেন জুতা-স্যান্ডেল। মেয়েদের আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় স্যান্ডেল ভাংচুর, মালাবন্ধন ইত্যাদি। মেয়েদের আগ্রহ ভারতীয় স্যান্ডেলের দিকে থাকলেও ছেলেদের চাহিদায় রয়েছে চায়না স্যান্ডেল।
বাজারে মেয়েদের জন্য রয়েছে বাহারী নামের স্যান্ডেল। তবে এমন বাহারী নামধারী জুতা-স্যান্ডেল নেই ছেলেদের। ফলে নাগরা স্যান্ডেলের দিকে ঝুঁকেছেন ছেলেরা। এছাড়াও সাইকেল সুজ, সাচ্চিসহ বিভিন্ন ধরনের স্যান্ডেল বাজারে রয়েছে। স্যান্ডেলের পাশাপাশি ছেলেরা কিনছেন লোফার সু।
বরাবরের মতই বাটা, এ্যাপেক্স, লোটো, হামকোর মত নামী-দামী ব্রান্ডের চেয়ে স্যান্ডেল পট্টিতেই ক্রেতাদের আগ্রহ ও সমাগম বেশি। নগরীর ভূবনমোহন-পার্ক সংলগ্ন এ স্যান্ডেল পট্টিতে জুতা-স্যান্ডেল কিনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন ক্রেতারা।
নগরীর বিভিন্ন জুতা-স্যান্ডেলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। দিন দিন এ ভিড় আরো বাড়ছে। ক্রেতাদের সামাল দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানীরা। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে বিক্রি ততই বেশি হবে বলে জানান বিক্রেতারা। সাধারণত ১৫ থেকে ২০ রমজানের পরেই জুতা-স্যান্ডেলের বিক্রি জমজমাট হয়। তবে রমজানের শুরু থেকেই ছোট বাচ্চা ও মেয়েদের জুতা-স্যান্ডেল বিক্রি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
ক্রেতা মেহেদী হাসান বলেন, রাজশাহীতে প্রায় দুই বছর ধরে অবস্থান করছি। আমার যত জুতা স্যান্ডেল সব এখান থেকেই কিনি। বলতে গেলে এটি রাজশাহীর সবচেয়ে বড় জুতা-স্যান্ডেলের মার্কেট। আর এখানে কম দামে যত মডেলের জুতা পাওয়া যায় তা বাটা বা এ্যাপেক্সের শোরুমে তা পাওয়া যায়না।
আরেক ক্রেতা কলেজ পড়ুয়া আয়েশা বলেন, ঈদ উপলক্ষে কলেজ ছুটি দিয়েছে। যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। রাজশাহী থেকেই ঈদের বাজার করে বাড়ি ফিরব। অন্যান্য কেনাকাটা শেষে স্যান্ডেল কিনতে এসেছি। স্যান্ডেলের নতুন কালেকশন থাকলেও দাম একটু বেশীই মনে করছেন তিনি।
নগরীর নেহাল সুজে’র আল আমিন বলেন, এবার ভারতীয় পোষাকের সাথে মিল রেখে স্যান্ডেল বাজারে এসেছে। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মেয়েদের জন্য পাওয়া যাচ্ছে এসব স্যান্ডেল। এগুলো ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ২হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, মেয়েদের চাহিদা ভারতীয় স্যান্ডেলের দিকে। যারমধ্যে ভাংচুর ও মালাবন্ধন উল্লেখ্যযোগ্য। মালাবন্ধন স্যান্ডেল দেখতে বেল্টওয়ালা স্যান্ডেলের মতই। বেল্টের ওপর দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনে বসানো পুঁথিই এর বিশেষত্ব। আর এটাই এই স্যান্ডেলের বিশেষ আকর্ষণ।
এদিকে আরেক বিক্রেতা কাদের সু ষ্টোর কর্তৃপক্ষ জানান, ঈদের বাজারে সাধারণত ছেলেরা শেষের দিকেই জুতা-স্যান্ডেল কেনেন। ছেলেদের জন্য এখনো বিশেষ কোন ডিজাইনের স্যান্ডেল বাজারে আসেনি। ছেলেদের স্যান্ডেল ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন বলে জানান তারা।
এছাড়াও অনেকেই মুচির দোকান থেকে নিজেদের পছন্দ মতো জুতা-স্যান্ডেল বানিয়ে নিচ্ছে। নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড় এলাকার মুচি দোকানী বাবু দাস জানান, ঈদ উপলক্ষে তারা জুতা স্যান্ডেল শেলাই করার পাশাপাশি নানান রকমের স্যান্ডেল তৈরি করছেন। ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন বানানো এ স্যান্ডেলগুলো।
এছাড়াও নগরীর লক্ষীপুর, বাটারমোড়, নিউমার্কেট, উপশহর নিউমার্কেট, আলুপট্টি, বিনোদপুরসহ বিভিন্ন মোড়ে জুতা-স্যান্ডেলের পাশাপাশি ফুটপাতে বসেছে অস্থায়ী জুতা-স্যান্ডেলের দোকান। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা তাদের সামর্থ অনুযায়ী এসব বাজার থেকে কিনছেন জুতা-স্যান্ডেল।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine