গত ১৩ মে থেকে বাজারে উঠছে রাজশাহীর আম। আম বাজার এখন গোপাল ভোগ, রাণী প্রসাদ, লক্ষ্মণ ভোগ ও হিম সাগরের দখলে। কিন্তু ঈদের ছুটির ফাঁদে পড়েছে রাজশাহীর আম বাজার। ক্রেতা না থাকায় নেই আমের দাম। ফলে গাছেই পাকছে আম। ঈদের পরে বাজার জমে উঠার প্রত্যাশা আম চাষিদের।
রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে। বানেশ্বর বাজারের ইউনিয়ন ভূমি অফিস মাঠেই বরাবর হাট বসে। এখনও জমে ওঠেনি এখানকার আমের বাজার।
ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, বেশির ভাগ আম চাষি আর কয়েকটি দিন অপেক্ষা করতে চাইছেন। তাদের আশা ঈদের পর আমের বাজার পুরোদমে জমে উঠবে। ভালো দামের প্রত্যাশায় অনেকেই গাছেই রেখে দিয়েছেন পাকা আম।
বানেশ্বর বাজার কাছারি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন গুটি আমের বিকিকিনি চলছে। সীমিত নেমেছে গোপাল ভোগ, রাণী প্রসাদ, লক্ষ্মণ ভোগ ও হিম সাগর জাতের নাম।
বাজারে এখন প্রতিমণ লক্ষ্মণ ভোগ আম বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়। ২৫ মে থেকে বাজারে উঠছে এই জাতের আম। শুরুতেই প্রতিমণ লক্ষণ ভোগ বিক্রি হয়েছে অন্তত ১২শ টাকায়। ঈদের ছুটির কারণে পড়েছে দাম।
গত ২০ মে গোপাল ভোগ, ২৫ মে রাণী প্রসাদ এবং ২৮ মে নেমেছে হিম সাগর জাতের আম। এখন বাজারে প্রতিমণ গোপাল ভোগ ১৮শ টাকা, রাণী প্রসাদ দেড় হাজার এবং হিম সাগর ১৭শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ছুটির কারণে অনেক বাগান মালিক আম নামাননি।
প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময়সীমা অনুযায়ী, আগামী ৬ জুন ল্যাংড়া, ১৬ জুন আম্রপালি ও ফজলি আম নামানো হবে। এছাড়া মৌসুমের শেষ আম আশ্বিনা নামবে ১ জুলাই থেকে নামানো হবে।
বানেশ্বরের আম আড়ৎদার মারুফ আহম্মেদ বলেন, পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাগমারা, বাঘা, চারঘাট, নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের বাগান মালিকরা আম বিক্রি করতে আসেন বানেশ্বর হাটে। এছাড়া বিড়ালদহ, বেলপুকুর, শাহবাজপুর, শিবপুরহাট এলাকাতেও বসে অস্থায়ী আমের হাট। ঈদের ছুটির কারণেই অধিকাংশ আমের হাট জমেনি। আম উঠছে সীমিত, বিক্রিও হচ্ছে কম।
পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওলিউজ্জামান বলেন, আম বাগান ও আড়তে সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। কোথাও কোনো অনিয়মের খবর পেলে তৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসেবে, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ এবং নাটোর জেলায় সর্বশেষ গত ২০১৭-২০১৮ কৃষি বর্ষে ৭০ হাজার ৩৪৬ হেক্টর জমিতে আমবাগান ছিল। তা থেকে আম উৎপাদন হয় ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৩৬১ মেট্রিক টন। এটিই এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা।
এর আগে ২০১১-২০১২ কৃষি বর্ষে রাজশাহী অঞ্চলে ৪২ হাজার ৪১৭ হেক্টর জমিতে আমবাগান ছিল। সেইবার আম উৎপাদন হয় ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩ মেট্রিক টন। এছাড়া ২০১৪-২০১৫ কৃষি বর্ষে ৫৪ হাজার ৭২২ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদন হয় ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৯৩৬ মেট্রিক টন।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ জাগোনিউজ২৪