ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবার রাজশাহী-ঢাকা রুটে কোনো স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস রাখা হয়নি। তবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ‘লালমনি’ ও ‘সান্তাহার’ স্পেশাল নাম দিয়ে দুই জোড়া এবং ‘খুলনা স্পেশাল’ নামে একটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলবে। এরইমধ্যে স্পেশাল ট্রেনের চিঠি পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কার্যালয়ে পৌঁছেছে। এছাড়া আগামী ৫ আগস্ট (সোমবার) থেকে রাজশাহীতে ফিরতি ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হবে।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আবদুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, ৫ আগস্ট থেকে ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা টিকিট বিক্রি করা হবে। একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকিট নিতে পারবেন। এজন্য অবশ্যই প্রত্যেক টিকিটপ্রত্যাশীকে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধনপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। আগাম টিকিট কোনোভাবেই ফেরত নেওয়া হবে না।
ঈদ স্পেশাল ট্রেনের শিডিউল সম্পর্কে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ডেপুটি চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার ফুয়াদ হোসেন আনন্দ বলেন, রাজশাহী-ঢাকা রুটে সিল্কসিটি, বনলতা, পদ্মা ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস নামে চারটি আন্তঃনগর ট্রেন চলছে। তাই এবার ঈদে এই রুটে কোনো স্পেশাল ট্রেন নেই। তবে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ‘লালমনি’ ও ‘সান্তাহার’ স্পেশাল নাম দিয়ে দুই জোড়া এবং ‘খুলনা স্পেশাল’ নামে একটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলবে। ১২ আগস্ট ঈদ ধরে ৮ আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত এবং ঈদের পরদিন ১৩ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এই বিশেষ ট্রেন।
উল্লেখিত দিনগুলোতে ঢাকা থেকে লালমনিরহাট রুটে ‘লালমনি স্পেশাল’ ও সান্তাহার থেকে ঢাকা রুটে ‘সান্তাহার স্পেশাল’ এবং কেবল ঈদের আগের দিন ঢাকা থেকে খুলনা অভিমুখে ‘খুলনা স্পেশাল’ ট্রেন ছেড়ে যাবে। এরইমধ্যে চিঠি পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কার্যালয়ে পৌঁছেছে। তাদের এ ব্যাপারে প্রস্তুতিও রয়েছে। এছাড়া আগামী ৫ আগস্ট থেকে রাজশাহীতে ফিরতি ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে বলে জানান ফুয়াদ হোসেন আনন্দ।
জানা যায়, আগামী ৫ আগস্ট ১৪ আগস্টের, ৬ আগস্ট ১৫ আগস্টের, ৭ আগস্ট ১৬ আগস্টের, ৮ আগস্ট ১৭ আগস্টের এবং ৯ আগস্ট ১৮ আগস্টের টিকিট দেওয়া হবে। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের মোট ৬টি কাউন্টারের মাধ্যমে ঈদের ফিরতি টিকিট বিক্রি করা হবে। এবারও কাউন্টার থেকে ৫০ ভাগ টিকিট এবং অ্যাপস ও অনলাইনের মাধ্যমে ৫০ ভাগ টিকিট বিক্রি করা হবে। ঈদের সময় টিকিটের জন্য কোনো অনুরোধপত্র গ্রহণ করা হবে না। তবে প্রাধিকারভুক্ত কর্মকর্তারা যথাযথ নিয়মে টিকিট পাবেন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) এএমএম শাহ নেওয়াজ জানান, এবার ‘রেলসেবা’ অ্যাপসে একই সঙ্গে প্রায় দুই লাখ ভিজিটর টিকিট কাটতে পারবেন। যারা অ্যাপস ব্যবহার জানেন না তারা সরাসরি কাউন্টার থেকেও ফিরতি টিকিট কাটতে পারবেন। এজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ৫ আগস্ট সকাল থেকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্টসহ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, জিআরপি পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন থাকবে। আর রাজশাহী-ঢাকা রুটে স্পেশাল ট্রেন না থাকলেও ঈদের বাড়তি যাত্রী সামলাতে চারটি আন্তঃনগর ট্রেনেই দুইটি করে বাড়তি বগি সংযুক্ত করা হবে বলে উল্লেখ করেন চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার।
এদিকে, সিঙ্গেল লাইন দিয়ে ট্রেন চালিয়ে ঈদের আগে কোনোভাবেই ট্রেনের শিডিউল পুরোপুরি ঠিক করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) খোন্দকার শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সক্ষমতা অনুযায়ী প্রতিদিন ২২টি ট্রেন চলতে পারে। সেখানে বর্তমানে চলাচল করছে ৫০টি ট্রেন। এই বাস্তবতায় শিডিউলের হেরফের ঘটছে। এছাড়া ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রেনের গতিও কমিয়ে আনতে হয়। ফলে নির্ধারিত সময়ে ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছাতেও পারে না আবার গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়েও যেতে পারে না।
তিনি বলেন, রেলওয়ে মানুষের আস্থার প্রতীক। তাই আমরাও সর্বোচ্চ সেবা দিতে প্রস্তুত। ঈদের সময় যাত্রীদের বাড়তি চাপ থাকে। তাই ট্রেনের সূচিতে যাতে বড় কোনো বিপর্যয় না ঘটে, সেদিকে বাড়তি নজর রয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান মহাব্যবস্থাপক।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর