আর মাত্র কয়েকদিন বাদেই কোরবানির ঈদ। এরই মধ্যে জমে উঠছে রাজশাহীর সবকটি পশুর হাট। তবে, ঈদ যতোই কাছে আসছে ততোই হাটগুলোতে ভারতীয় গরুর আধিপত্য বাড়ছে। এতে লোকসানে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় খামারিরা।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত মাসে রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে গরু আসছে ভারত থেকে। এসব গরু ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন হাটে। বৈধ ও অবৈধভাবে গরুগুলো আসছে সীমান্ত দিয়ে।
রাজশাহী সিটি বাইপাস হাটে আমজাদ হোসেন নামে এক দেশি খামারি জানান, হাটে দিনে দিনে ভারতীয় গরুর সংখ্যা বাড়ছে। এতে ক্রমান্বয়ে দেশিগুলোর ক্রেতার সংখ্যা কমেছে।
এদিকে, রাজশাহীতে এ বছর কোরবানির জন্য যে সংখ্যক দেশি গরু রয়েছে তাতে ভারত থেকে আমদানি করার খুব বেশি প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
রাজশাহী প্রাণি সম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় কোরবানির চাহিদা রয়েছে চারলাখ সাড়ে ৪ হাজার পশুর। জেলার নয় উপজেলায় ছোট বড় মিলে প্রায় সতের হাজার সাতশটি খামার রয়েছে। গতবার জেলায় পশু জবেহ হয়েছিল তিন লাখ ৯৬ হাজার ৫১৯টি। যার মধ্যে গাভী ও বকনা দুই হাজার ৯৮১টি, ষাড় ও বলদ ৭১ হাজার ২৫৬টি, মহিষ ৭৪৫টি, ছাগল তিন লাখ ১৭ হাজার ৬৯৪টি ও ভেড়া তিন হাজার ৮৪৩টি।
এখন পর্যন্ত খামার ও গৃহস্থ ঘরে কোরবানীর জন্য সম্ভাব্য মজুত রয়েছে তিন লাখ ৬৯ হাজার ৫৭৪টি। যার মধ্যে গাভী ও বকনা ছয় হাজার ১৮টি, ষাড় ও বলদ ৭১ হাজার ৮৩১টি, মহিষ দুই হাজার ৬৭৫টি, ছাগল দুই লাখ ৭৪ হাজার ৭৫টি ও ভেড়া ১৩ হাজার ৬৭৫ টি এবং অন্যান্য এক হাজার ১৩৬টি। প্রাণি সম্পদ অফিস থেকে প্রতিবছর ২শতাংশ বৃদ্ধি ধরে সম্ভাব্য চাহিদা নিরুপন করা হয়। এতে আগামী ঈদে ৩৪ হাজার ৮৭৫টি পশুর ঘাটতি রয়েছে।
এ সামান্য ঘাটতি আশেপাশের জেলাগুলোর দেশি পশু দিয়েও মেটানো সম্ভব। তবে চাহিদার তুলনায় অধিক পশু থাকার পরেও সীমান্ত দিয়ে গরু আসায় খামারিরা লোকসানে পড়বেন। ফলে তারা নিরুৎসাহিতও হবেন বলে মন্তব্য করেছেন দেশি খামারীরা।
লাভজনক ব্যবসা হিসেবে অনেক নতুন উদ্যোক্তা রাজশাহী অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে দেশীয় গরুর খামার গড়ে তোলেন। এসব খামারে দেশীয় পদ্ধতিতে পালন করা হয় গবাদিপশু। কোরবানির মৌসুমে বিক্রির জন্য খামারিরা সারা বছর গরু লালন-পালন করেন। তবে শেষের দিকে যেভাবে হাটে ভারতীয় গরুর আমদানী বাড়ছে তাতে স্থানীয় খামারিরা লোকসানে পড়বেন মনে মন্তব্য করেছেন খামারিরা।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine