নাব্যতা ফেরাতে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে চলছিল ড্রেজিং প্রকল্প। ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং করার কথা ছিল রাজশাহী নগরীর বুলনপুর থেকে সোনাইকান্দি এলাকার ছয় কিলোমিটার। কিন্তু উজানের ঢল নেমে আসায় মাত্র দুই হাজার ৭০০ মিটার ড্রেজিং করতে পেরেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে খরচ দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। প্রকল্পের ১১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ফেরত নিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ।
ভারতের সঙ্গে নৌপথে বাণিজ্য বাড়াতে রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক নৌবন্দর স্থাপনের অংশ হিসেবে গভীর চ্যানেল তৈরি ছিল এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। কিন্তু উজানের ঢলে সেটি ভেস্তে গেছে। তাছাড়া পলি পড়ে ড্রেজিং করা দুই হাজার ৭০০ মিটার অংশ ভরাট হয়ে গেছে। এতে খরচ করা ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা জলে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, পদ্মায় ড্রেজিং শুরু হয়েছিল চলতি বছরের এপ্রিল মাসে। তখন পদ্মায় পানি ছিল কম। নগরীর বুলনপুর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ড্রেজারে কাজ চলেছে প্রায় আড়াই মাস। কিন্তু অর্ধেকেরও কম কাজ শেষ হওয়ার আগেই উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ফুলেফেঁপে ওঠে পদ্মা। ফলে কাজ গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জানতে চাইলে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের সামনের অংশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ড্রেজার দিয়েই কাজ চলছিল। কিন্তু পদ্মায় আগাম ঢল চলে আসায় কাজ গুটিয়ে নিতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদও শেষ হয়েছে। তবে মেয়াদ বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
এবিষয়ে রাজশাহীর সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান জানান, উজান থেকে আসা পলিতে পদ্মার বুক অন্তত ২০ মিটার করে ভরাট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় মাত্র ছয় কিলোমিটার ড্রেজিং করে প্রবাহ ফেরানোর চেষ্টা কেবলই লোক দেখানো।
সরকারের পানি বিষয়ক টাস্কফোর্সের সদস্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী সারোয়ার জাহান বলেন, অসময়ে কাজ শুরু করায় গচ্চা গেছে প্রকল্পটির মোটা টাকা। তাই সরকারি টাকার এমন অপচয় রোধে নদী শাসনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে উপযুক্ত সময় বেছে নেয়া জরুরি। তা না হলে সরকারের কেবল টাকাই খরচ হবে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবে না।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ জাগোনিউজ২৪