পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বেশ কিছুদিন হয়ে গেল। দাম কমবে এমন আশা করে হতাশায় সাধারণ ক্রেতারা। রাজশাহীতে ‘পেঁয়াজের দাম’ নামে লাগামহীন ঘোড়াটা যেন থামছেই না। দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। এক সময় সেঞ্চুরীর ঘরে পৌঁছে যায় পেঁয়াজের দাম। সেটিও এখন অতীত। এখন সেই পেঁয়াজের দাম ডবল সেঞ্চুরী করে ফেলেছে।
বৃহস্পতিবার রাজশাহীর খুচরা বাজারে এখন মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। আবার কোথাও কোথাও তা ডবল সেঞ্চুরী করে ফেলেছে। পেঁয়াজে আসক্ত বাঙালির এখন নাকানিচুবানি অবস্থা।
বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। কোথাও কোথাও তা ২০০ ছাড়িয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে অস্থির হয়ে উঠে পেঁয়াজের বাজার। ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। বাংলাদেশ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের ওপরই নির্ভরশীল। ফলে দেশের বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়তে থাকে। তখন দুই দিনের মধ্যে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা ছাড়ায় দেশি পেঁয়াজের দাম। ভারতীয় পেঁয়াজও বিক্রি হতে থাকে ১০০ টাকার কাছাকাছি দরে। অবশ্য বাজার তদারকি ও হুজুগ শেষের পর দাম আবার কিছুটা কমে। তবে গত কয়েক দিন ধরে আবার লাগামহীন হয়ে পড়েছে পেঁয়াজের দাম।
বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার এলাকায় বাজার করতে আসা ভদ্রা এলাকার শিল্পী বেগম জানান, দৈনিক খাবারে পেঁয়াজ খেয়ে অভ্যাস হয়ে পড়েছে। তাই এর বিকল্প ভাবতে পারা যায় না। কিন্তু এতো দাম দিয়ে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
শিল্পী বেগম আরো বলেন, ‘মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষরা কেমন করে কিনবে পেঁয়াজ। দেখেন বাজারে ২০০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ নিলাম। ২০০ টাকায় পেঁয়াজ কিনলে অন্য সবজী কিভাবে কিনবো। এক কেজিতে ৫০ থেকে ৬০টি পেঁয়াজ পাওয়া যায়। দেখেন, প্রতি পেঁয়াজ প্রায় তিন টাকা করে দাম পড়ছে। আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন কোথাই যাব! আগের চেয়ে রান্নায় পেঁয়াজ কম দিতে হচ্ছে।’
বাজারে পেঁয়াজ বিক্রিও কমে গেছে। সাহেব বাজার এলাকার এক দোকানি জানান, ক্রেতারা আগের চেয়ে অর্ধেক পেঁয়াজ কিনছে। এতে পেঁয়াজ বিক্রি কমে গেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘গতকালের পেঁয়াজ অর্ধেকও বিক্রি করতে পারিনি। তাই আজকে আর নতুন করে পেঁয়াজ কিনি নাই। কারণ কাস্টমাররা দাম শুনেই ফিরে যাচ্ছে। বিক্রিও কমে গেছে। তার চেয়ে ভালো যে আপাতত পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ রাখি।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এখন পেঁয়াজের মৌসুম শুরু হওয়ার আগমুহূর্ত চলছে। এ সময় স্বাভাবিকভাবেই একটা সংকট থাকে। আমাদের নতুন পেঁয়াজ এখনো ওঠেনি। কিছুদিনের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ উঠবে। সেই সময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ দৈনিক সানশাইন