প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত লেকটি (চন্দ্রিমা লেক) সদ্য সংস্কার করা হয়েছে। আর সেই লেকের পানিতে ফেলা ভাঙড়ির ময়লা আবর্জনা ভাসছে। একই সাথে লেকের গ্রিলের ওপর বস্তিবাসী তাদের কাপড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখছে। এতে একদিকে যেমন লেকটির পানি দুষিত হচ্ছে, তেমনি পুরো এলাকার সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে।
সূত্র মতে, প্রায় ৩০ বছর আগে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) ব্যবস্থাপনায় ভদ্রা সংলগ্ন চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় ইংরেজী অক্ষর এল আকৃতির একটি লেক গড়ে তোলা হয়। দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে লেকটির তীরগুলো ভেঙে পড়ে। লেকটি হারায় সৌন্দর্য। এসময় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেতে হতো লেক সংলগ্ন রাস্তায় চলাচল করা যানবাহন ও পথচারীদের।
সম্প্রতি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে চন্দ্রিমা লেকটি সংস্কার করা হয়। আমূল পরিবর্তন আসে লেকটির সৌন্দর্যে। লেক ঘিরে চতুর দিকে গড়ে তোলা হয়েছে পায়ে হাটা পথ, নিরাপত্তার জন্য লেক ঘেষে দেয়া হয়েছে গ্রিল। আধুনিক মানের ইট দিয়ে এর ধারগুলো বাঁধাই করা হয়েছে। বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে পুরো লেক ঘিরে।
লেকটির পূর্ব ও উত্তর পাড়ে পরিচ্ছন্ন চন্দ্রিমা আবাসিক থাকলেও ঠিক বিপরীত চিত্র এর উল্টো দিকে। পশ্চিম ও দক্ষিণ তীর ঘেষে রেলের জায়গায় গড়ে উঠেছে বস্তি। বস্তিবাসীর অসচেতনতায় লেকটির পুরো সৌন্দর্য ব্যহত হচ্ছে; পানি দুষিত হচ্ছে। এই বস্তিবাসীর অন্যতম জীবিকা ভাঙড়ি কুড়ান। ফলে দিন শেষে বস্তিবাসী তাদের সংগ্রহ করা ভাঙরিগুলো বস্তিতে নিয়ে এসে জরো করে। এর পর বস্তি সংলগ্ন রাস্তার ওপর তার বাছাই করে। বাছাই শেষে অপ্রয়োজনীয় অংশগুলো চন্দ্রিমা লেকে ফেলা হচ্ছে। লেকের স্বচ্ছ পানিতে ভাংড়ির সেই উচ্ছিষ্টগুলো ভাসছে নয়তো তলিয়ে যাচ্ছে। এতে করে লেকের পানি দুষিত হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়; লেকের তীর ঘেষে নিরাপত্তার জন্য যে গ্রিল বসান হয়েছে তার ওপর বস্তিবাসী তাদের গায়ের কাপড়, চাদর, লেপ, কম্বল, কাঁথা, বালিশ, বাচ্চাদের কাপড়সহ বিভিন্ন নোংরা কাপড় টাঙিয়ে রাখছে। যা সদ্য সংস্কার করা লেকটির সৌন্দর্য নষ্ট করছে। আবার লেক ঘেষে পশ্চিম পাড়ে রাখা হচ্ছে দূর পাল্লার বাস। সেই বাসগুলো লেকের পানিতেই ধোয়া হচ্ছে।
এলাকাবাসীর দাবি, প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে চন্দ্রিমা লেক ঘিরে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য যে কাজ করা হয়েছে তা কাজে আসছে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে লেক ঘিরে এই অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করা হোক। বস্তিবাসীকে সচেতন করা হোক। নয়তো আগামীতে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। ভেস্তে যাবে নগর সৌন্দর্যের পরিকল্পনা।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ দৈনিক সানশাইন