দিনভর আকাশ তাতিয়েছে সূর্য। কিন্তু দুপুর গড়াতেই নীল আকাশটা গুমরে উঠে কালো মেঘের চাদরে মুড়ি দেয়। বিকেলে হঠাৎই বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রাজশাহীর প্রধান অর্থকরী ফসল আম-লিচুর।
রাজশাহীর ওপর দিয়ে তীব্র ঝড় বয়ে যায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ঝড় ১০ মিনিট স্থায়ী ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ৫৬ কিলোমিটার। এর আগেই শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। মেঘের গগণফাটা গর্জনে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে রাজশাহীর মানুষ।
সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টি পরিমাপক যন্ত্রে (রেইন গেজ) জমা হয় ১৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার পানি। যা চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় ভারী বৃষ্টিপাত বলছে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস।
আর ১০ মিনিটের কালবৈশাখীতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সবকিছু। বিশেষ করে আম ও লিচুসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া রাজশাহীর পবা, গোদাগাড়ী, বাঘা-চারঘাটসহ বিভিন্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চল থেকে গাছপালা ভেঙে পড়া এবং কাঁচাঘর-বাড়ির টিনের চালা উড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৃষ্টির চলছিল।
তবে আম, লিচু কিংবা ফসলের ঠিক কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, রাজশাহীর ওপর দিয়ে কালবৈশাখী শুরুর পর গোটা মহানগরী বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া, কালবৈশাখীর ছোবলে মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে গাছপালা পড়ে গেছে। কালবৈশাখী বয়ে যাওয়ার পর ভারী বর্ষণে মহানগরীর সাহেব বাজার ও গণকপাড়া ছাড়াও উপশহর, বর্ণালীর মোড়, আমবাগান, কলাবাগান, কোর্ট হড়গ্রাম ষষ্টিতলা এলাকায় এরই মধ্যে পানি জমে গেছে। এতে লকডাউনের মধ্যেও চলাচলরত যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়া পর্যবেক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, ঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৫৬ কিলোমিটার। তবে বৃষ্টি শুরু হয় আগে। বিকেল ৪টা ২৮ মিনিট থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। আর বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে শুরু হয় কালবৈশাখী। চলে ১০ মিনিট পর্যন্ত। এসময় বজ্রসহ ভারী বর্ষণ হয়। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৬টায় বাতাসে আর্দ্রতা ৯৪ শতাংশ এবং সন্ধ্যা ছয়টায় ১০০ শতাংশ। ঝড় থেমে গেলেও বর্তমানে বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশে অনেক মেঘ আছে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ