শুক্রবার (২৯ মে) বিকেল ৬টা। রাজশাহী নগরীর ধার দিয়ে বয়ে চলা পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত লালনশাহ উন্মুক্ত মঞ্চ ধরে একদল মানুষ নদী তীর থেকে উঠে আসছে। কারো মুখে মাস্ক আছে তো কারো নেই। আবার কোন কোন অভিভাবক নিজে মাস্ক পরে থাকলেও, তার সাথে থাকা শিশুটির মুখে মাস্ক নেই। পুরো পরিবেশ দেখে বোঝার উপায় নেই দেশে মহামারি চলছে।
সমনেই রাজশাহী জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের একজন ম্যাজিস্ট্রেট দাড়িয়ে প্রত্যেকের পথরোধ করে বিজ্ঞাসাবাদ করছেন,
স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাড়ির বাইরে বের হওয়ার কারণ কী? কেউ সদুত্তর দিতে না পারলেও উল্টো ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে তর্ক শুরু করেন।
দুই জন যুবককে ম্যাজিস্ট্রেট জিজ্ঞেস করলেন আপনারা নদীর তীরে কেন এসেছেন? সাথে মাস্কটাও নেই! উত্তরে একজন যুবক বেশ জোড় গলায় উত্তর দিলো, বাজারে এতো মানুষ ওদেরকে কিছু বলেন না! উত্তরে ম্যাজিস্ট্রেট জানালেন, বাজার বন্ধ করলে খাবেন কী!
এসময় একটি পরিবারের সাথে থাকা পুরুষ সদস্যকে নদীতীরে আসার কারণ জানতে চাইলে, তার সাথে থাকা নারীকে দেখিয়ে বললেন, উনি অসুস্থ। ম্যাজিস্ট্রেট আবারো প্রশ্ন করলেন, অসুস্থ রোগীকে নিয়ে নদীতীরে এসেছেন? এর কোন উত্তর দিতে পারলেন না ওই মানুষটি।
এভাবে যাকেই জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, সেই মানুষটিই এমন নানা খোড়া যুক্তি দিয়ে পার পেতে চাচ্ছেন। তবে ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যেককে তাদের নাগরিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করছেন। সাথে পুলিশ সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহযোগীতা করছে। এসময় স্বাস্থ্যবিধিসহ সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ৪ জনকে জরিমনা করা হয় ও প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে জরিমানার অর্থ আদায় করা হয়।
অভিযানের ফাঁকে কথা হলে ভ্র্যাম্যমাণ আদালতে ম্যাজিস্টেট রিফাতুল ইসলাম জানান, জরিমানা করা আমাদের মূল উদ্দেশ্য নয়। সবাইকে সচেতন করাই উদ্দেশ্য। ঈদের দিন থেকেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে।
এদিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক জানান, করোনামহামারিতে বিদ্যমান বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে এখন বিনোদনের সময় নয়। এখন সময় সতর্ক হবার। আপনি সতর্ক না হওয়ার কারণে যদি নিজে আক্রান্ত হন, তবে আপনার দারা আপনার পরিবারে বা সমাজে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে। যতই দিন যাচ্ছে রাজশাহীতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নাগরিক দায়িত্বটুকু পালন করতে হবে। আর এই মুহুর্তে আমাদের নাগরিক দায়িত্ব হলো ঘরে থাকা।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ দৈনিক সানশাইন