রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গত ৮ এপ্রিল দ্বিতীয় ডোজ শুরুর দিনই সস্ত্রীক টিকা নেন- সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। এরপর শরীরে জ্বর অনুভূত হওয়ায় ১৩ এপ্রিল রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে নমুনা দেন।
পর দিন ১৪ এপ্রিল তার পজেটিভ ফলাফল আসে। পরে রাত ৮টায় তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার ছয় দিনের মাথায় তিনি করোনা পজিটিভ হন। যদিও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার তিন সপ্তাহ পর অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। তাই এটা স্বাভাবিক ঘটনা।
কিন্তু এবার রাজশাহীতে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার একমাস সাত দিন পর করোনা পজিটিভ হয়েছেন- একজন কলেজ শিক্ষক। তবে তিনি সুস্থ রয়েছেন। এখনও তার শরীরিরিক কোনো জটিলতা নেই। তিনি বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। সিভিল সার্জন তার খোঁজ-খবর রাখছেন। আর এটিকেও স্বাভাবিক ঘটনা উল্লেখ করেছেন রাজশাহী স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
তানভীর হক নামের ওই কলেজ শিক্ষক বলেন, ‘গত ১৭ মে সকাল থেকে লক্ষ্য করলাম আমার জ্বর এবং শরীর ব্যথা। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম আমার করোনা পরীক্ষা করা দরকার। এর পর ১৯ মে সকাল বাড়ি এসে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মীরা। এরপর রাতে জানানো হলো আমি করোনা পজিটিভ। তবে এখন পর্যন্ত আমার আর অন্য কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ’
তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে- করোনা টিকা নেওয়ার পর ৯২ শতাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আর বৈজ্ঞানিকভাবেও শতভাগ নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।
রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. কাইউম তালুকদার বলেন- কলেজ শিক্ষকের করোনা পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি তিনিও নিশ্চিত হয়েছেন। এখন ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও ১শ’ জনে আটজন পুনরায় করোনায় সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। আর ভ্যাকসিন নেওয়ার পর যিনি আক্রান্ত হয়েছেন। সেই শিক্ষকের সঙ্গে এরই মধ্যে তার কথা হয়েছে।
এদিকে, মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় রাজশাহীসহ বিভাগের সাত জেলাতেই শনিবার থেকে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। কেবল বগুড়ায় এই কার্যক্রম চালু রয়েছে। তাই শনিবার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে সবাই ফিরে গেছেন। ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত এই কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে ভ্যাকসিন না পাওয়া নিয়ে এখনই উদ্বেগের কিছু নেই। প্রথম ডোজ নেওয়ার অন্তত তিনমাস পরও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যাবে। এর মধ্যেই ভ্যাকসিন আনার ব্যাপারে তাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
রাজশাহীতে প্রথম দফায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭৭৪ জনকে করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে। আর নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় টিকা দেওয়া হয়েছে ৮১ হাজার ৬৪০ জনকে।
মোট টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ২ লাখ ১৫ হাজার ৪১৪ জন। এছাড়া মজুদ শেষ হওয়ায় দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে পারছেন না জেলায় এমন ব্যক্তির সংখ্যা ৫২ হাজার ১৩৪ জন। এছাড়া রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় প্রথম ডোজের টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ৬ লাখ ৬৪ হাজার জন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন প্রায় ৩ লাখ ৯২ হাজার জন। এখন রাজশাহী বিভাগের প্রায় ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষ দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকবেন। মজুদ ফুরিয়ে আসায় এখন প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ