উত্তরবঙ্গের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বোটানিকাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানায় নতুন অতিথি হিসেবে আগমন ঘটেছে সাড়ে তিন বছরের একটি ঘোড়ার। ঘোড়াটি উপহার হিসেবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে প্রদান করেছেন জুয়েল রানা টিটু নামের ১৮ নং ওয়ার্ডের এক যুবলীগ নেতা।
ভ্যাটারনারি সার্জন ড. ফরহাদ উদ্দিনের পক্ষে ঘোড়াটি গ্রহণ করেন চিড়িয়াখানার সুপারভাইজার আবুল কালাম আজাদ ও এনামুল হক। জুয়েল রানা টিটু জানান, ঘোড়াটির বয়স সাড়ে তিন বছর। তিনি শখ করে ঘোড়াটি সংগ্রহ করেন এবং তা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে উপহার হিসেবে প্রদান করেন।
প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা আমাদের দেশে ঘোড়দৌড় বা রেস খেলার প্রচলন করে। সেসময় এই খেলা দেখা ও বাজি ধরায় প্রচন্ড উত্তেজানা সৃষ্টি হত। শহরাঞ্চলেই ঘোড়দৌড় মাঠ বা রেসকোর্স ছিল। রেসের নেশায় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসতেন। অনেকে এ খেলায় সর্বশান্ত হয়েছে। এধরণের খেলায় কার্যত আয়োজকরাই লাভবান হয়েছে। রাজশাহী শহরের রেসকোর্স ছিল পদ্মার পাড়সহ এই বোটানিকাল গার্ডেন ঘিরে। সেই সময়ের রেসকোর্স ময়দান রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা।
রেস ও টমটম বন্ধ হওয়ার পর রাজশাহীর রেসকোর্স ময়দান দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত ছিল। শহরবাসীর বিনোদনের আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার জন্য তৎকালীন মন্ত্রী শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এখানে উদ্যান নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ১৯৭২ সালে এর কার্যক্রম শুরু হয়। প্রায় ৩৩ একর ভূমিতে নির্মিত উদ্যানটিকে জেলা পরিষদের নিকট থেকে ১৯৯৬ সালের ২৬ নভেম্বর রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করে। তৎকালীন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী জিল্লুর রহমান রাসিকের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এলাকাটি হস্তান্তর করেন।
১৯৮৩ সালে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আবদুস সালাম একটি বড় ড্রামে এক জোড়া ঘড়িয়ালের বাচ্চা ছেড়ে দিয়ে চিড়িয়াখানার পত্তন করেন। ১৯৮৫ সালে জেলা প্রশাসক ও পরে বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা পরিষদের প্রচেষ্টায় একটি পূর্ণাঙ্গ চিড়িয়াখানায় উন্নীত হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই চিড়িয়াখানায় যে নান্দনিক রূপ দেয়ার কর্মযজ্ঞ চলছে তা অন্য যেকোন সময়ের চাইতে উন্নত ও সুপরিকল্পিত। আর এই পরিকল্পিত কর্মযজ্ঞের কারিগর রাসিকের বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine