করোনা রোগীর চাপে ধারণক্ষমতা ছাড়িয়ে গেছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল। এই হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে তিনজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। অন্য সাতজন করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর আগের দিন ১২ জনের মৃত্যু হয়।
শনিবার (১০ জুন) সকালে রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শুক্রবার (১৮ জুন) সকাল ৬টা থেকে শনিবার (১৯ জুন) সকাল ৬টার মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা মারা যান। মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর পাঁচজন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচজন রয়েছেন। এ নিয়ে চলতি মাসের এই ১৯ দিনে (১ জুন সকাল ৬টা থেকে ১৯ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১৯৩ জন। মৃতদের বেশিরভাগেরই বাড়ি ভারত সীমান্তবর্তী উচ্চ সংক্রমিত এলাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী জেলায়। বর্তমানে এ দুই জেলায় ‘বিশেষ লকডাউন’ চলছে। এর পরও এই দুই জেলা সংক্রমণের চূড়ায় পৌঁছেছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন আরও ৪৬ জন। শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩৬৫ জন। আগের দিন ভর্তি ছিলেন ৩৪৯ জন। ফলে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা আবারও বেড়েছে। অথচ সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর পরও রয়েছে ৩০৯টি। আর আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২০টি। এই ২০টি শয্যার বিপরীতে গড়ে ৭০ জন আইসিইউর জন্য অপেক্ষায় থাকছেন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, করোনা রোগীদের জন্য একের পর এক সাধারণ ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হচ্ছে। এখন এ হাসপাতালের ২৯-৩০, ৩৯-৪০, ২৫, ২২, ২৭, ১৬, ১৫, ৩ এবং ১ নম্বর ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা চলছে। এছাড়া কেবিনে ১৫টি বেড আছে। সব মিলিয়ে এ হাসপাতালে ৩০৯টি বেডে করোনা রোগী ভর্তি করা হচ্ছে। এছাড়াও ওই ওয়ার্ডগুলোতে অতিরিক্ত আরও ১৫টি বেড দেওয়া হয়েছে।
রামেক হাসপাতাল পরিচালক শামীম ইয়াজদানী বলেন, যেভাবে রোগী বাড়ছে, সেভাবে চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা বাড়ানো যাচ্ছে না। ফলে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে বর্তমানে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া করোনা রোগীদের জন্য নতুন নতুন ওয়ার্ড বাড়ানোর কারণে অন্য রোগের চিকিৎসা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ এই হাসপাতালে মোট ১ হাজার ২০০টি শয্যা আছে। এখানে রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর এবং চুয়াডাঙ্গার রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন। আর করোনা পরিস্থিতি নাজুক হওয়ার কারণে রামেক হাসপাতালে রোগীর চাপ কয়েকগুণ বেড়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ