ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ জিতে নিল ফ্রান্স। নিজেদের ইতিহাসে এ নিয়ে দ্বিতীয় শিরোপা চুমু খেল ফরাসিরা। তবে প্রথমবার ফাইনালে উঠে খালি হাতে ফিরতে হলো ক্রোয়েশিয়াকে।
এবারের ফাইনালটি শুধু ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বলেই নয়, বিশ্ববাসী মনে রাখবে অন্য অনেক কারণে। যেখানে প্রথমবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে আত্মঘাতী গোল হলো। গত ৬টি বিশ্বকাপে ৬টি গোল হয়েছে, তবে এবার এক ম্যাচেই ৬টি গোল হলো।
ম্যাচে অবশ্য বল পজিশনে ক্রোয়েশিয়া ৬১ শতাংশ এগিয়ে ছিল। কিন্তু ৩টি অন টার্গেটের মধ্যে তারা ২টিতে গোল করতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে বল পজিশনে পিছিয়ে থাকলেও ফ্রান্স ৬টি অন টার্গেট শটের মধ্যে ৪টিতে গোল আদায় করে নেয়।
এ ম্যাচের মধ্যদিয়ে অবশেষে দীর্ঘ এক মাসের রাশিয়া বিশ্বকাপের পর্দা নামলো। যেখানে ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যকার ম্যাচের মাধ্যমে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি মাঠে গড়ায়। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় মুখোমুখি হয় তারা।
ফাইনালের এ ম্যাচে অবশ্য দু’দলই সেমিফাইনালের একাদশ অপরিবর্তিত রাখে।
ফাইনালের মহারণে শুরুতেই আত্মঘাতী গোলে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ম্যাচের ১৮ মিনিটে শ্রোতের বিপরীতে আঁতোয়া গ্রিজমান ফ্রি-কিক নিলে সেখান থেকে প্রতিপক্ষের মারিও মান্দজুকিচের মাথায় লেগে গোলটি হয়। বিশ্বকাপ ফাইনাল ইতিহাসে এটি প্রথম আত্মঘাতী গোল।
তবে ১০ মিনিটের ব্যবধানেই ফ্রান্সের বিপক্ষে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। ২৮ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার ফ্রিকিক শট ফরাসি ডিফেন্স ক্লিয়ার করতে না পারায় বল চলে যায় ইভান পেরিসিচের দিকে। তিনি এনগোলে কান্তের কাছ থেকে বল নিয়ে নিচু জোরালো শটে গোলটি আদায় করে নেন। ১-১-এ সমতায় ফেরে ক্রোয়েটরা।
কিন্তু ম্যাচের ৩৫ মিনিটে কর্ণার কিক থেকে আসা বল ক্রোয়েশিয়ান ডিফেন্ডার ইভান পেরেসিচ ক্লিয়ার করতে গিয়ে হাতে বল জড়িয়ে ফেলেন। সেখান থেকে রেফরি ভিএআর প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে ফ্রান্সের দিকে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। আর ৩৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সফলভাবে গোলটি আদায় করে নেন আঁতোয়া গ্রিজমান। এই বিশ্বকাপে ৪টি গোল ও দুটি অ্যাসিস্ট মিলিয়ে ৬ গোলে যুক্ত হলেন এই স্ট্রাইকার। পরে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ফ্রান্স।
দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে খেলতে থাকে ফ্রান্স। একের পর এক আক্রমণ করা ফ্রান্স আরও ব্যবধান বাড়ায়। ৫৯ মিনিটে জটলা থেকে জোড়ালো শটে দারুণ এক গোল করে ফরাসিদের ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন পল পগবা।
পগবার গোলের মাত্র ৬ মিনিট পরে গোল করে উৎসবে যোগ দেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তার গোলে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আরও এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ফরাসিরা এই তরুণ স্ট্রাইকারের গোলে ৪-১ ব্যবধানে লিড নেয়।
৬৯ মিনিটে ফ্রান্স গোলরক্ষক হুগো লোরিসের ভুলে গোল করে বসেন ক্রোয়েশিয়ান স্ট্রাইকার মারিও মান্দজুকিচ। ফলে ৪-২-এ ব্যবধান কমায় ক্রোয়েটরা। তবে এই গোলটি ক্রোয়েটদের সান্ত্বনার গোলই হয়ে থাকলো। কেননা শেষ বাঁশি বাজার আগে আর কোনো গোল না হলে বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠে ফ্রান্স।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ২৪