দু’দিন কিছুটা কমে গিয়ে আবারও বেড়েছে তাপদাহ। একেবারে তীব্র তাপদাহের পর্যায়ে পৌঁছেছে রাজশাহীর তাপমাত্রা। দেশের উত্তরের এ জনপদে রোববার (২৮ এপ্রিল) মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলিসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলিসিয়াস হলেই অবস্থাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে গণ্য করে আবহাওয়া অধিদফতর।
ব্যারোমিটারের হিসাব বলছে, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি কোথাও কোথাও প্রায় তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। তাপদাহের এই অবস্থা আরো পাঁচদিন বিরাজ করবে। এ সময় কমবে না রাতের গরমও। দেশের সবগুলো অঞ্চলের তাপমাত্রা রেকর্ড বলছে, রোববার চট্টগ্রাম অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রাঙামাটিতে ৩৬ ডিগ্রি, ঢাকায় ৩৬ ডিগ্রি (এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ ফরিদপুরে ৩৭ ডিগ্রি), রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলিসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের খুলনায় ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি, যশোরে ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি, চুয়াডাঙায় ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপামাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বরিশাল অঞ্চলের তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রির নিচে। সিলেটে ৩৪ ডিগ্রির নিচে এবং রংপুরে ২৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি আর বিভাগটির সর্বোচ্চ দিনাজপুরে ৩১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ময়মনসিংহ অঞ্চলেও তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩১ ডিগ্রির মধ্যেই ছিল। অর্থাৎ সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে তাপপ্রবাহ নেই। বরং এসব অঞ্চলে কালবৈশাখীও হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণি বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা তেমন নেই। তবে উড়িয়ে দেওয়াও যাবে না। ফণি যেভাবে এগিয়ে আসছে, তাতে এটি যদি বাংলাদেশের উপকূলে আসে, তবে সেটি হবে ৪ মে রাত অথবা ৫ মে’র দিন। আর ভারতের উপকূলে আঘাত হানলে আরো একদিন আগেই আঘাত হানবে। এক্ষেত্রে ৩ মে পর্যন্ত বর্তমানে যে তাপমাত্রা আছে, এমনই থাকবে। এসময় রাতের তাপমাত্রাও কমবে না বলে মনে করছেন তিনি। বলেন, রাতের বায়ুর তাপ ও জলীয় বাষ্পের তাপের তারতম্যের কারণে গরম অনুভূত হচ্ছে বেশি। রাতে জলীয় বাষ্প বেড়ে যাচ্ছে। জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি হলে শরীরের ঘাম বায়ু শুষে নিতে পারে না। এজন্যই বেশি গরম লাগে।
ঘূর্ণিঝড় উপকূলের কাছাকাছি না আসা পর্যন্ত দেশজুড়ে কালবৈশাখীর তেমন সম্ভাবনা নেই। কোথাও কোথাও ঝড়, বৃষ্টি হবে তবে সেটা বড় আকারে নয়। ওমর ফারুক বলেন, রোববার যেমন ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলে কালবৈশাখী হয়েছে। এমন করেই আগামী কয়েকদিন কোথাও কোথাও ঝড় বৃষ্টি হবে।
ঘূর্ণিঝড় ফণি রোববার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬ ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৬৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। একই সঙ্গে গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। আর দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য রাতে কোনো সতর্কতা দেখাতে বলা হয়নি।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine