রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সামির উদ্দীন। ছয় বছর আগে এক দুর্ঘটনায় বাম পা হারিয়েছেন তিনি। এরপর থেকে কৃত্রিম পা সংযোজন করেই চলছে তার জীবন। প্রতি তিনবছর অন্তর সেই কৃত্রিম পায়ের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।
এক লাখ টাকা খরচ করে সংযোজন করতে হয় নতুন কৃত্রিম পা। সম্প্রতি তার কৃত্রিম পা নষ্ট হয়ে গেছে। সেটি দিয়ে কোনোভাবে হাঁটা-চলা করছেন। কিন্তু দিনমজুর বাবার পক্ষে সংযোজনের অর্থ জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না।
সামির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায়। ভোরনিয়াদিহট গ্রামের দিনমজুর সাইফুল ইসলামের সন্তান তিনি। স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়েছেন টিউশন ও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে পাওয়া বৃত্তির টাকায়। ঠাকুরগাঁও থেকেই ২০১৬ সালে এসএসসি ও ২০১৮ সালে এইচএসসি পাস করেন সামির।
পারিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় সামিরের পড়ালেখার খরচ চালানো সম্ভব ছিলো না তার বাবার। তাই ছোট থেকেই টিউশানি আর অন্যের জমিতে কাজ করতেন সামির। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন জমিতে কাজ করতে গিয়ে ট্রাক্টরের চাকার নিচে পড়ে বাম পা হারান তিনি। বিভিন্নজনের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে শরীরে কৃত্রিম পা সংযোজন করান।
রাজশাহীর সেন্টার ফর দি রিহ্যাবিলিটেশন অব দি প্যারালাইজডের এস এম ইমরান শোয়েবের কাছ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন সামির। বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) চিকিৎসক দ্রুত নতুন কৃত্রিম পা সংযোজনের জন্য বলেন। কিন্তু টাকার অভাবে কৃত্রিম পা কিনতে পারছেন না তিনি।
সামির উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, বাবা টাকা দিতে পারতো না বলে অন্যের জমিতে কাজ করতাম। দুর্ঘটনার পর থেকে বিভিন্নজনের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত এসেছি। বর্তমানে যেই কৃত্রিম পাটি আছে সেটির কর্মক্ষমতা নেই। খুব কষ্ট হচ্ছে চলতে। ডাক্তার দ্রুত নতুন পা লাগাতে বলেছেন।’
আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল হান্নান বলেন, সামিরের বিষয়টি নিয়ে বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় তোলা হবে। এরপর যতটুকু সম্ভব আমরা তাকে সহযোগিতা করা হবে।
সামির সমাজের সহৃদয়বানদের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন। তাকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা ডাচ বাংলা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর- ১৭২১০৫৫১৬১৪। এ ছাড়াও সামিরের নিজস্ব বিকাশ অ্যাকাউন্টে (০১৭৭৩৮৪৭৭৮১) টাকা পাঠানো যাবে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ২৪