মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ এর হার কমেছে। এবারে রাজশাহী বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৬৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। বিগত সাত বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম পাসের হার। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ১৩৮ হাজার জন শিক্ষার্থী। ২০১৭ সালে পাসের হার ছিল ৭১ দশমিক ৩০। ফলে পাসের হার কমেছে ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। গতবারের চেয়ে কমেছে জিপিএ-৫-এর সংখ্যাও। গতবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫ হাজার ২৯৪ জন। এবার পেয়েছে ৪ হাজার ১৩৮ জন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফল ঘোষণা করেন রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনোয়ারুল হক প্রাং। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনোয়ারুল হক প্রাং জানান, এবার পাসের হারে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা ভালো করেছে। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৪১ হাজার ২৭৮ জন। অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩০ জন শিক্ষার্থী।
গত বছর এর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ১৮২ জন। এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১৭ হাজার ৯৬ জন। এবার ১৮৯টি কেন্দ্রের মাধ্যমে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ২ এপ্রিল এবার পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় ১৩ মে। ১৪ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে ২৩ মে শেষ হয়।
রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের তথ্য অনুযায়ি বিগত ৬ বছরের তুলনায় এবারে পাশের হার সবচেয়ে কম। ২০১৭ সালে পাশের হার ছিল ৭১ দশমিক ৩০ শতাংশ, ২০১৬ সালে ৭৫ দশমিক ৪০ শতাংশ, ২০১৫ সালে ৭৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৭৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ, ২০১৩ সালে ৭৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ ও ২০১২ সালে পাশের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এবারে বিগত সালগুলোর চেয়ে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছে। চলতি বছর পাশের হার ৬৬ দশমিক ৫১ শতাংশ।
এদিকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে। ২০১৭ সালে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫ হাজার ২৯৮ জন, ২০১৬ সালে ৬ হাজার ৭৩ জন, ২০১৫ সালে ৫ হাজার ২৫০ জন, ২০১৪ সালে ৭ হাজার ৬৪১ জন, ২০১৩ সালে ৭ হাজার ৬৬৬ জন ও ২০১২ সালে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৮৭২ জন। বিগত সালগুলোর চেয়ে সংখ্যা কমে এবারে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ১৩৮ জন।
এবারে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে মোট এ বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৪১ হাজার ২৭৮ জন। অংশ নিয়েছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩০ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে বিজ্ঞান ও গার্হ্যস্থ অর্থনীতিতে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৪ হাজার ৭৯৫ জন। যার মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৩৪ হাজার ২২৬ জন। পাস করেছে ২৭ হাজার ৭৩ জন। মানবিক বিভাগে ৮৫ হাজার ৪০৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৮৩ হাজার ৯৯৬ জন। পাস করেছে ৫১ হাজার ৪১৩ জন। বাণিজ্যিক বিভাগে ২১ হাজার ৩৮৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ২১ হাজার ১০৮ জন। পাস করেছে ১৪ হাজার ১৮৮ জন।
এদিকে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে অসাদুপায় অবলম্বনে বহিস্কৃতি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৮ সালে ২৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ১০। এক বিষয়ে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে এবার। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে এক বিষয়ে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবার ৩৫ হাজার ৩৭ জন।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনোয়ারুল হক প্রাং জানান, এবার আইসিটি, ইংরেজি ও পদার্থ বিজ্ঞানে ফলাফল সবচেয়ে খারাপ হয়েছে। এ তিনটি বিষয়ের কারনে কমে গেছে পাসের হার।
এদিকে জেলাভিত্তিক ফলাফল রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অধিনে ৮টি জেলার মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছে বগুড়া জেলা। এ জেলায় পাসের হার ৭১ দশমিক ২০ শতাংশ। জেলা থেকে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ২৮৪ জন। যার মধ্যে পাশ করেছে ১৭ হাজার ২৮৯ জন। জিপিএ-৫ প্রাপ্ত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজার ৬৮৮ জন। সবচেয়ে খারাপ ফলাফলে আছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। এখান থেকে পাসের হার ৬০ দশমিক ৩১ শতাংশ। ১২ হাজার ১৮৫ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছে ৭ হাজার ৩৪৯ জন। জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯৮ জন।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন