যে বয়সে বই-খাতা নিয়ে স্কুলে কাটানোর কথা সে বয়সে ক্ষুধা নিবারনের আশায় বেলন হাতে ঘুরতে হয় শিশু সাব্বিরকে। এ বেলুন নিয়ে শখের বস নয় জীবনের তাগিদে ঘুরতে হয় সাব্বিরকে। সাবিরের বংয়য় এখন৮ বছর। মায়ের আঁচলে আর পিতার হাত মাথায় নিয়ে বেড়ে ওঠার বয়সে তার চেপে বসেছে ক্ষুধা নিবারণের তাড়না।
অনেক শিশুর মতো সাব্বির। খেলার বয়স চলছে। মনেও আছে খেলার তীব্র বাসনাও। খেলতে অনেক ভালবাসে, সে যেখানে যায় সেখানেই তার খেলনা নিয়ে যায়, এমনকি ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে ময়লা সংগ্রহ করতেও সে তার হাতে খেলনা নিয়ে য়ায়। সাব্বিরের হৃদয়ের খুব কাছে আঁকড়ে ধরা পড়ে খেলার তাড়না।
মাত্র ৮ বছর বয়সী সাব্বির দৈনিক ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা করে কাজ করে। তার স্কুলে যাওয়ার সামর্থ্য নাই, আহার জুটাতে খেলার বয়সে এক হাতে নিয়েছে প্লাস্টিকের ফুল বেলুন। সেগুলো বিক্রির করে বেড়ায় এই শৈশবেই। তার শৈশবের সব স্বপ্নকে ধারণ করে আছে কিন্তু দরিদ্রের কষাঘাতে পিষ্ট হয়ে প্রতিনিয়ত আলো দেখার সুযোগ পায়না। সাব্বির অর্থাভাবে স্কুলে যেতে পারেনা, যেখানে জীবন বাঁচাতে খাদ্যের যোগান পাওয়াই অনিশ্চিত সেখানে শিক্ষা কেবলই বিলাসী স্বপ্ন।
রাজশাহী নগরীর রেলগেট বাচ্চুরমোড়ে বেড়ে ওঠাা সাব্বিরের। সাব্বির জানায় মাকে সুস্থ করার জন্য সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় কখনো বেলুন কখনো ফুল বিক্রি করে। কিছু টাকা জমা করে সাহেব বাজার থেকে বেলুন কিনে বিক্রি করে। নগরীতে রোজ কত স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আসে, কত স্বপ্নভঙ্গ মানুষ ছেড়ে চলে যায় তার হিসেব থাকেনা কারও কাছে। এই স্বপ্নচারী বা স্বপ্নভঙ্গ মানুষের না, তাদের তবুও স্বপ্নভেঙ্গে নীড়ে ফেরার উপায় থাকে। যাদের স্বপ্ন দেখার সাহস জন্মায় না, যাদের ফিরে যাওয়ার মতো থাকেনা কোনো আশ্রয়, যারা পথেই বেড়ে ওঠে, স্বজন থাকলেও যাদের অনেকেই জানেনা পিতামাতা, স্বজন কিংবা আপনজন বলতে কি বুঝায়, তাদের ভালবাসা অনুভব করতে কেমন বোধ হয়।
তেমনি এক শিশু সাব্বির। মা তালাকপ্রাপ্ত। বাবা মাদকাসক্ত। তাদের খেয়াল রাখেনা কেউ তাই নতুন করে অন্য জায়গাতে সংসার বেধেছে। মা সংসার চালাতে পারছেনা । তাদের সংসারে অভাব অনটন লেগেই থকে। তাদের মা ছেলের ঠিকমত খাবার জোটেনা ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার/সুযোগ-সুবিদা প্রদানে ব্যার্থ হয়েছে। ছিন্নমূল সাব্বির তাই জীবন সংগ্রামে নেমে বিভিন্ন কাজ-কর্মে করে চলেছে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine