দুই পাশে নদী। মাঝ খানের উচু জায়গায় পানিবন্দী বাঘার লক্ষ্মীনগর চরের প্রায় অর্ধ শতাধিক পরিবার। অব্যাহত বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পানি প্রবাহের কারণে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে এখন তারা চরম ভাবে বিপদগামী। শুধু লক্ষ্মীনগর নয়, চরাঞ্চলের সকল নিচু এলাকায় এখন পানি জমেছে। এর ফলে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে জমির ফসল। সেই সাথে কোন-কোন এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। হুমকির মুখে এসে দাঁড়িয়েছে লক্ষ্মীনগর ও চকরাজাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরেজমিন বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা।
সরেজমিন বাঘা উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে ঘুরে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের গোকুলপুর, কিশোরপুর, আলাইপুর ও মনিগ্রাম ইউনিয়নের হরিরামপুর এলাকায়। যা গত ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যবেক্ষণ করে গেছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
অপরদিকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধীর ফলে ভাঙ্গনসহ অসঙ্খ ফসলী জমি পানির নিচে তুলিয়ে গেছে নবগঠিত চকরাজাপুর ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ এলাকা। এ সমস্ত এলাকার মধ্যে রয়েছে চর কালিদাস খালি, দিয়ার কাদিরপুর, চৌমাদিয়া, লক্ষ্মীনগর, আতার পাড়া, জোতশী ও পলাশি ফতেপুর গ্রাম। এর মধ্যে পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছে অসঙ্খ বাড়ি-ঘরসহ লক্ষ্মীনগর ও চকরাজাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুলগ্রামী শিক্ষার্থীরা। অনেকেই নদীতে পানি বাড়ার কারনে ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। আবার অনেকেই তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। এতোমধ্যে চকরাজাপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা পানিবন্দী হয়ে পড়ার কারণে তাদের দোকান-পাট সরিয়ে নিচ্ছেন।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানর আজিজুল আযম জানান, গত এক সপ্তাহ ব্যাপী নদীতে পানি বৃদ্ধির কারনে তাঁর এলাকার লক্ষ্মীনগর এবং চকরাজাপুর এলাকার মান্নান মন্ডল, আবুল কালাম, হাফিজুর, হারান সরকার, হিরু মন্ডল,মিজানুর, বাচ্চু মিয়া, শহিদুল, জাহিদুল, সাইফুল, সাজাহান, আনিছুর, শরিফুল, হারান এবং জব্বার মন্ডলসহ অসঙ্খ ব্যাক্তি তাদের বাড়ী ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। এতে করে তারা আর্থিক ভাবে চরম ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে কিছু এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সেই সাথে নিচু এলাকায় ফসল ডুবে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তিনি এ সংক্রান্তে একটি প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক মহাদ্বয়কে জানিয়েছেন। আশা করা যায়, খুব শিগগিরই ত্রাণ পৌঁছে যাবে।
তিনি বলেন, এটি মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি’র নির্বাচনী এলাকা। নদী ভাঙন রোধে নির্বাচনের আগে তিনি স্থায়ী সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে মর্মে মাঝে কিছু ব্লকের কাজ হয়েছিল। তবে অধিকাংশ এলাকায় এখনো কাজ বাঁকি রয়েছে। যা গত ২৩ সেপ্টেম্বর সম্পন্ন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে গেছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ দৈনিক সানশাইন