বাংলাদেশের উচ্চতর শিক্ষার প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম হলো রাজশাহী কলেজ। দুবলাহাটির রাজা রায় বাহাদুর হরলাল রায়-এর আর্থিক সহায়তায় রাজশাহী শহরে ১৮৭৩ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজা হরনাথ রায় কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য যে জমি দান করেছিলেন, সে সম্পত্তি থেকে বার্ষিক আয় ছিলো প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর অল্প সময়ের মধ্যে পূর্ববঙ্গ, উত্তর বঙ্গ, বিহার, আসাম ও পূর্ণিয়ার অধিবাসীদের জন্য উচ্চ শিক্ষার প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে এটি।
রাজশাহী কলেজকে ঢাকা কলেজ ও চট্টগ্রাম কলেজের পরে বাংলাদেশের তৃতীয় প্রাচীনতম কলেজ মনে করা হয়। অবিভক্ত বাংলার এই অঞ্চলে রাজশাহী কলেজ ছিল প্রথম প্রতিষ্ঠান যেখানে মাস্টার্স ডিগ্রী পর্যন্ত পাঠদান করা হতো।
বর্তমানে এই কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। ১৯৯৬ সাল থেকে কলেজে উচ্চমাধ্যমিক স্তর বন্ধ করা হলেও ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে পুনরায় চালু করা হয়েছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত রাজশাহী কলেজ সংলগ্ন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল এবং খুব কাছাকাছি বিখ্যাত বরেন্দ্র যাদুঘর।
ইতিহাস ও অ্যাকাডেমিক পটভূমিঃ
শিক্ষানগরী হিসেবে রাজশাহী মহানগরীর গোড়াপত্তন হয় ১৮২৮ সালে ‘বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। প্রতিষ্ঠানটি তদানীন্তন পূর্ব বাংলায় আধুনিক শিক্ষার ইতিহাসে পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছিলো। মূলত ইংরেজি শিক্ষার প্রতিস্থাপনা ও প্রসারকল্পে সে সময় রাজশাহীতে কর্মরত ইংরেজ কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল’। সেদিনের সে ক্ষুদ্র ‘বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল’ ১৮৩৬ সালে প্রাদেশিক সরকার জাতীয়করণ করলে এ স্কুলটি রাজশাহী জিলা (বা জেলা) স্কুল নামে পরিচিত হয় (এই বিদ্যালয় রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল হিসেবে এখন পরিচিত)। স্কুলের ছাত্রদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়ায় রাজশাহী অঞ্চলের বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা ও আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৮৭৩ সালে জেলা স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের মর্যাদা দেয়া হয় এবং একই বছর ৫ জন হিন্দু ও ১ জন মুসলমান ছাত্রসহ মাত্র ছয় জন ছাত্র নিয়ে কলেজিয়েট স্কুলের সঙ্গে চালু হয় উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর সমমানের এফ. এ. (ফার্স্ট আর্টস) কোর্স।
১৮৭৮ সালে এই কলেজকে প্রথম গ্রেড মর্যাদা “First Grade Rank” দেয়া এবং “রাজশাহী কলেজ” নামে নামকরণ করার সাথে সাথে একে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে বি.এ. কোর্স চালু করা হয়। ফলে উত্তরবঙ্গের সর্বপ্রথম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী কলেজ। ১৮৮১ সালে এই কলেজে স্নাতকোত্তর শ্রেণির উদ্বোধন করা হয় এবং ১৮৮৩ সালে যোগ হয় বি.এল. কোর্স।
রাজশাহী শহরে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ভূস্বামী রাজা, জমিদার এবং বিত্তশালীদের ভূমিকা ছিলো উল্লেখযোগ্য। এদের মধ্যে দুবলহাটির জমিদার হরনাথ রায় চৌধুরী, দীঘাপতিয়ার রাজা প্রমথনাথ রায়, রাজা প্রমোদ রায় ও বসন্ত রায়; পুঠিয়ার রাণী শরৎসুন্দরী দেবী ও হেমন্তকুমারী দেবী; বলিহারীর কুমার শরবিন্দু রায়; খান বাহাদুর এমাদ উদ্দীন আহমেদ, কিমিয়া-ই-সাদাত-এর অনুবাদক মীর্জা মো: ইউসুফ আলী, হাজী লাল মোহাম্মদ, নাটোরের জমিদার পরিবারের খান বাহাদুর রশীদ খান চৌধুরী, খান বাহাদুর এরশাদ আল খান চৌধুরী ও বঙ্গীয় আইন পরিষদের ডেপুটি স্পিকার ব্যারিস্টার আশরাফ আলী খান চৌধুরী ছিলেন অগ্রগণ্য। এছাড়া নাটোরের খান চৌধুরী জমিদার পরিবার রাজশাহী শহরের হেতম খাঁ এলাকার তাঁদের পারিবারিক বাসস্থান ‘চৌধুরী লজ’-এ রাজশাহী কলেজে অধ্যয়নরত প্রায় বিশ জন গরীব মুসলমান ছাত্রের জন্য বিনা ভাড়ায় থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তদানীন্তন পশ্চাৎপদ মুসলমান সমাজের শিক্ষার উন্নয়নে তাদের এই ভূমিকা ছিলো তাৎপর্যপূর্ণ।
কলেজের প্রথম প্রিন্সিপাল ছিলেন হরগোবিন্দ সেন, যিনি রাজশাহী জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি পাঁচ বছর (১৮৭৩-১৮৭৮) এই কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন।
পূর্ব পাকিস্তানে রাজশাহী কলেজ প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় এবং পরে ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত হলে তার অধীনে এই কলেজে ১৯৯৪ সালে মাস্টার্স স্তরের কোর্স পুনরায় চালু হয়। বর্তমানে, উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি ছাড়াও কলেজে ২২টি বিষয়ে সম্মান কোর্স এবং ২১ বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। কলেজ লাইব্রেরিতে অনেক দুর্লভ বই, গেজেট, এনসাইক্লোপিডিয়া এবং পাণ্ডুলিপি রয়েছে। প্রাচীন পাণ্ডুলিপির অনেকগুলোই পুঁথিতে সমৃদ্ধ।
রাজশাহী কলেজে ধারাবাহিক বিস্ময়কর সাফল্য যেভাবে এলো:
ভবনসমূহঃ
প্রতিষ্ঠার শুরুতে রাজশাহী কলেজের কোন নিজস্ব ভবন ছিল না। রাজশাহী এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ কলেজের প্রথম ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন। একজন দক্ষ ইংরেজ প্রকৌশলীর পরিকল্পনায় ১৮৮৪ সালে একষট্টি হাজার সাতশ টাকা ব্যয়ে বর্তমান প্রশাসন ভবনটি নির্মিত হয়।গাঢ় লাল বর্ণের দোতলা ভবনটি একাডেমিক কালের গ্রাস জয় করে নগরীর প্রধান ও প্রাচীনতম সড়কের পাশে আজও মথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ঔপনিবেশিক আমলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুরোনো ভবনগুলো হলো ফুলার ভবন, জীববিজ্ঞান ভবন, রসায়ন ভবন, পদার্থবিজ্ঞান ভবন, প্রাক্তন মুসলিম ছাত্রাবাস ইত্যাদি।
খরস্রোতা পদ্মা নদীর উত্তরে হযরত শাহ মখদুম (রহঃ) এর মাজার-এর পূর্ব পাশে নির্মিত হয় অধ্যক্ষের দোতলা বাসভবন। এই ভবনটিতে উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদগণ বসবাস করে গেছেন। কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মহোদয়ও এখানে বসবাস করছেন। ব্রিটিশ স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত ভবনটি এখনও স্বমহিমায় অক্ষত রয়েছে। অধ্যক্ষের বাসভবনের পূর্বপ্রান্তে শিক্ষকদের জন্য রয়েছে দুটি তিন তলা আবাসিক ভবন।
গ্রন্থাগার,গবেষণাগার, প্রকাশনা ও তথ্য পরিষেবাঃ
প্রায় তিন লাখ বইয়ের সংগ্রহ নিয়ে রাজশাহী কলেজে রয়েছে এক বিশাল গ্রন্থাগার। যেখানে রয়েছে পুরোনো দিনের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ছাড়াও নিত্যনতুন প্রয়োজনীয় বইসমূহ। মুক্ত জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রতিদিনই সেখানে ভীড় জমান কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অনেকেই। মুদ্রিত তথ্য প্রাপ্তির নির্ভরযোগ্য উৎস হলো রাজশাহী কলেজ গ্রন্থাগার।
গবেষণাগারঃ কুড়িটি গবেষণাগার যা পরীক্ষণ করার জন্য আধুনিক ও আদি যন্ত্রপাতি দ্বারা সজ্জিত।
প্রকাশনাঃ রাজশাহী কলেজের নিয়মিতভাবে জনপ্রিয় বার্ষিকী ও সাময়িকী প্রকাশের ঐতিহ্য বিদ্যমান। উপরন্তু বর্তমানে বিশেষ এবং গবেষণা সমৃদ্ধ জার্নালের প্রকাশনা এই ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধতর করেছে।
তথ্য পরিষেবাঃ রাজশাহী কলেজের সকল তথ্য ও উপাত্তকে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় আনার জন্য নিজস্ব সার্ভার স্টেশন, LAN, ব্রডব্যাণ্ড লিজড লাইন সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী কলেজঃ
দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক সকল সংকটে রাজশাহী কলেজের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীগণ ব্যাপক অবদান রেখেছেন। তাঁরা স্বদেশী আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। ভাষা আন্দোলন, গণঅভ্যুথান, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির সকল গৌরবোজ্জল লড়াই সংগ্রামের ইতিহাসে আষ্টেপৃষ্টে ছড়িয়ে রয়েছে রাজশাহী কলেজের নাম।
৫২’র ভাষা আন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারী সব শহীদের স্মরণে নির্মিত দেশের প্রথম শহীদ মিনারও রয়েছে এই ক্যাম্পাসেই। ৫২’র ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের উপর গুলি বর্ষণের খবর ট্রেনে করে রাজশাহী আসে। তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী কলেজ ও আশপাশের প্রগতিশীল চিন্তাধারার শিক্ষার্থীরা সমবেত হয় কলেজ ছাত্রাবাসে। সিদ্ধান্ত হয় ইট-মাটি দিয়ে রাতেই শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ তৈরির।
জানেন কী, দেশের প্রথম শহীদ মিনার রাজশাহীতে!
শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে ১৯৬২ এবং ১৯৬৯ ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁরা বিপুল সংখ্যায় মহান সাহস এবং বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
রাজশাহী কলেজে বরাবরই শিক্ষার মান উন্নত ছিলো এবং বর্তমানেও তা অব্যাহত আছে। কলেজের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের সাফল্য কলেজের উন্নত শিক্ষামানের সাক্ষ্য বহন করে। উল্লেখ্য, ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্ব পর্যন্ত তদানীন্তন পূর্ববাংলায় একমাত্র রাজশাহী কলেজেই স্নাতক সম্মান ও মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠদান করা হতো। সে সময় অবিভক্ত বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ছাড়াও আসাম, বিহার ও উড়িষ্যা থেকে শিক্ষার্থীরা এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের জন্য আসতেন। শুধু তাই নয়, অবিভক্ত ভারতবর্ষে রাজশাহী পরিচিত ছিলো রাজশাহী কলেজের নামেই।
রাজশাহী কলেজ মানেই লাল ভবন ও সবুজ প্রকৃতিতে ঘেলা একটি সুন্দর ও পরিপাটি ক্যাম্পাস। পড়ালেখা, সাংস্কৃতিক চর্চা, সাহিত্য চর্চা, আড্ডা, গল্প কিংবা গান সব কিছুই চলে সমান তালে।
সময়ের সঙ্গে নিজেকে আধুনিকতায় সাজিয়েছে রাজশাহী কলেজ। কলেজের প্রতিটি বিভাগে চালু করা হয়েছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। শিক্ষকদের জন্য সরবরাহ করা হয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ল্যাপটপ। গবেষণা আর তথ্য বিনিময়ে বহির্বিশ্বের সাথে শিক্ষার্থীদের যোগাযোগে দেয়া হয়েছে ওয়াই-ফাই সেবা। কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে শ্রেণিকক্ষ, প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ ফটকগুলো ঢেকে দেওয়া হয়েছে সিসি ক্যামেরায়।
প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরিত উত্তরবঙ্গ তথা দেশের শিক্ষাঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলা প্রতিষ্ঠানটি। শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় রয়েছে অসংখ্য সহশিক্ষা সংগঠন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি, রোভার স্কাউট, বিএনসিসি, বিতর্ক ক্লাব, রেঞ্জার গাইড, বিজ্ঞান ক্লাব, ক্যারিয়ার ক্লাব, বিজনেস ক্লাব, সংগীত একাডেমী, নৃত্য চর্চা কেন্দ্র, বাঁধন, বরেন্দ্র থিয়েটার, অন্বেষণ, নাট্য সংসদ, আবৃত্তি পরিষদ, ফটোগ্রাফি ক্লাব, রোটার্যাক্ট ক্লাব, এথিক্স ক্লাব, প্রেজেন্টেশান ক্লাব, ক্রিয়েটিভ ক্লাব, ইনোভেশন ক্লাব, রেড ক্রিসেন্টসহ প্রতিটি বিভাগে রয়েছে একটি করে স্বতন্ত্র ক্লাব।
‘সুস্থ দেহ সুস্থ মন’ এই চিরন্তন সত্যকে সামনে রেখে রাজশাহী কলেজে রয়েছে একটি ব্যায়ামাগার। এখানে শিক্ষার্থীরা তাদের শারীরিক ও মানসিক গঠনে ব্যায়ামসহ নানা অনুশীলন করে থাকেন।
নগরীর বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে পরিবহন ব্যবস্থাও। পাঁচ শতাধিক কম্পিউটার সম্বলিত ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব’ রাজশাহী কলেজেই। ল্যাবে কলেজের সকল শিক্ষার্থী বাধ্যতামূলক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ছাড়াও আউটসোর্সিং ও বিভিন্ন প্রোগ্রামিংয়ের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগেও আলাদা ল্যাব রয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩১টি সূচকে টানা চারবার এবং শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১৪টি সূচকে প্রতিবারই সেরার মুকুট অর্জন করেছে রাজশাহী কলেজ। মডেল কলেজের স্বীকৃতিও রয়েছে রাজশাহী কলেজের ঝুঁলিতেই।
সঙ্গত কারণেই বাঙালি ও বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ রাজশাহী কলেজ। পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু, খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য স্যার যদুনাথ সরকার, বৈজ্ঞানিক প্রথায় ইতিহাস চর্চার পথিকৃত অক্ষয় কুমার মৈত্র, সাবেক প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমান, পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ আলী মিয়া, জননেতা ও শিক্ষানুরাগী মাদার বখশ, জাতীয় চার নেতার একজন এএইচএম কামারুজ্জামানের মতো বরেণ্য ব্যক্তি ছিলেন এ কলেজের ছাত্র।
সৃজনশীল ও উদ্যমী শিক্ষক, সচেতন অভিভাবক, উদার রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও স্থানীয় প্রশাসন, নিবেদিত প্রাণ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী সর্বোপরি সৃষ্টিশীল ও মননশীল শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ রাজশাহী কলেজের অগ্রযাত্রার মূল উৎস।
তথ্যসূত্র: https://rc.gov.bd/brief-history-bengali/