আর মাত্র চারদিন পর কোরবানীর ঈদ। ঈদকে সামনে রেখে স্থানীয় চাহিদা পুরনের পাশা-পাশি এবার বাঘার চরাঞ্চল থেকে অসঙ্খ দেশি গরু রপ্তানী করা হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়। ঈদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ব্যস্ততা বাড়ছে ব্যবসায়ীদের।
তারা বলছেন, প্রতিবছর ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে রাজশাহীর বাঘা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করতো ভারতীয় গরু। কিন্তু এবার তার প্রয়োজন হবে না। কারণ বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে এবার দেশি গরু আমদানি বেশি রয়েছে।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রাজশাহীর বাঘা সীমান্ত দিয়ে এখন পর্যন্ত ভারতীয় গরু দেশের অভ্যান্তরে প্রবেশ করেনি। তারপরও এ অঞ্চলের হাট গুলোয় পশু আমদানির কমতি নেই। এখন পর্যন্ত যা লক্ষ করা গেছে, এলাকার বানেশ্বর, রুস্তমপুর এবং চন্ডিপুরের হাটে পশু আমদানি বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।
এ দিক থেকে গত সপ্তার চেয়ে এই মুহুর্তে ক্রেতা এবং ব্যবসায়ী সমাগমও অনেক বেশি। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় গরু রপ্তানীর জন্য ব্যবসায়ী (ব্যাপারীর) উপস্থিতি বেড়েছে। এরা স্থানীয় হাটগুলো থেকে গরু-ছাগল ক্রয় করারপর সে গুলোকে উপজেলা সদরের ঐতিহাসিক শাহী মসজিদ এবং দিঘী এলাকা থেকে ট্রাক ভর্তি করে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, রাজশাহী, নাটোর ও পাবনার একটি অংস নিয়ে সপ্তাহ জুড়ে এই অঞ্চলে গরুর হাট বসে। এর মধ্যে রাজশাহীর সিটি হাটসহ পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরের হাট বসে প্রতি শনিবার, বাঘার রুস্তমপুরে বুধবার এবং চন্ডিপুরে হাট বসে শুক্রবার। অপরদিকে নাটোর জেলার তেবাড়িতে হাট বসে প্রতি রবিবার ও গোপাল পুরে সোমবার। এ ছাড়াও পাবনার অরণ কোলায় হাট বসে প্রতি শুক্র ও মঙ্গলবার।
সরেজমিন বুধবার বাঘার রুস্তমপুর ও শুক্রবার চন্ডিপুর গরুহাট ঘুরে দেখা গেছে, বেচা-বিক্রি ভালই জমে উঠেছে। সকাল থেকে গরু ছাগল আসতে শুরু করছে হাটে। এরপর একটানা বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলছে অসংখ্য গরু-ছাগলের আমদানি ও বেচা-বিক্রী।
বিক্রেতারা বলছেন, এ বছর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে গরু আমদানি হয়নি। তবে স্থানীয় চাহিদা পুরন করছে বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে পোশা দেশী গরু। তাদের মতে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতা-বিক্রেতা আসছেন এই হাটে।
এর আগে গত সোমবার নাটোর জেলার গোপালপুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন মূল্যের গরু-ছাগলের আমদানি ও বেচা-বিক্রিও ছিল লক্ষণীয়।
ক্রেতারা জানান, এবার সীমান্ত পথে ভারতীয় গরু আমদানি হচ্ছে না। এদিক থেকে বাজার যে অনেক চড়া তাও নয়, বরং দেশী গরুতে ভরে গেছে হাট। ওই হাটে গরু কিনতে আসা ব্যাক্তি হোসেন আলী জানান, এই মুহুর্তে যে গরুটি ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রী হচ্ছে, গত ঈদে সেটি বিক্রী হয়েছে ৪৫ থেকে ৫৫ হাজার টাকায়।
তবে ঢাকা থেকে গরু কিনতে আসা ব্যাপারী আব্দুর রহমান জানান, গরুর ব্যবসা অনেকটা ভাগ্যের উপরেও নির্ভর করে। তিনি বলেন, গত বছর ঈদউল আযহার পূর্বে তিনি ৩০টি গরু কিনে ব্যবসায় লচ করেছিলেন। কারন সেইবার গরু আমদানি অনেক বেশি ছিল। এ দিক থেকে তিনি আগের বছর ২০ টা গরুতে খরচ বাদে প্রায় এক লক্ষ টাকা লাভ করে ছিলেন।
এ কারনে এবারও কিছু গরু কেনার চেষ্টার করছেন। তিনি ক্ষোবের সাথে জানান, উত্তরাঞ্চলে পশুর দাম কম। তবে কেনার পর ঢাকায় নিতে রাস্তায় পুলিশের চাঁদা-বাজি ও শ্রমিক নেতাদের টোল দেয়ায় লাভের অংশ ফুরিয়ে যায়। তিনি এ বিষয়ে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন