নাটোর জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৮ জনের মধ্যে সাতজনই সুস্থ রয়েছেন। তবে একজন আগেই করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগ দাবি করেছে। তবে এ ঘটনা জানার পর বুধবার (২৯ এপ্রিল) সকাল থেকেই পুরো জেলা লকডাউনে চলে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুলিশ প্রশাসন। এজন্য আগে থেকে পুলিশ আরও কঠোর অবস্থানে যাবে।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান পুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, করোনায় আক্রান্তদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই রাতেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় ছুটে গেছেন ইউএনও ও পুলিশ প্রশাসন। লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পৌরসভাসহ আক্রান্ত এলাকা।
তিনি জানান, গত ২২ এবং ২৩ এপ্রিলের নমুনায় ৮ জনের করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। মঙ্গলবার দিনগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার কাছে আইইডিসিআর থেকে পাঠানো এক মেইল বার্তায় এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
আক্রান্তের মধ্যে সিংড়া পৌরসভায় ৫ জন, সদর উপজেলা ১ জন এবং গুরুদাসপুরে ২জন। এ তথ্য রাত ১০টার দিকে নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান।
সিংড়ায় ৫ জন আক্রান্তের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টেকনিশিয়ান (সদর উপজেলার তেবাড়িয়া বসবাস করেন), নার্স সিংড়ার (গোডাউনপাড়া), উত্তর দমদম এলাকায় ১ জন, কাটাপুকুরিয়ার ১ জন এবং হাজীপাড়া ১ জন (করোনা উপসর্গ নিয়ে আগেই মারা গেছে)। এছাড়া গুরদাসপুর উপজেলার নাজিরপুরে ২ জন এবং সদর উপজেলর ছাতনী ইউনিয়নের আগদীঘা এলাকায় একজন। তবে আক্রান্ত ৮ জনের মধ্যে আগেই একজন মারা গেছেন। বাকি ৭ জন সবাই সুস্থ রয়েছেন। তাদের অনেকের কোয়ারেন্টিন সময় শেষ হয়েছে।
নাটোরের সিভিল সার্জন আরও জানান, এ পর্যন্ত নাটোর জেলায় ২৮৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে ১৪৪টি নমুনার রিপোর্ট নেভেটিভ এসেছে। বাকি ১৩৮টি নমুনার রিপোর্ট স্থগিত ছিল। এরমধ্যে গত ২২ ও ২৩ তারিখের নমুনার বেশিরভাগ রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে।
সিংড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন বানু জানান, আক্রান্তের মধ্যে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন সিনিয়ার স্টাফ নার্স, টেকনিশিয়ানসহ মোট ৫ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে পৌরসভার হাজীপুর এলাকায় একজন বৃদ্ধ করোনা উপসর্গ নিয়ে আগেই মারা গেছেন। কিন্তু পরিবারের লোকজন তথ্য গোপন করার কারণে তাকে স্বাভাবিক নিয়মেই দাফন করা হয়েছে। তবে নমুনা সংগ্রহ করার পর তার পজেটিভ এসেছে।
তিনি বলেন, আমরা পুরো পৌর এলাকা লকডাউন ঘোষণা করছি। পাশাপাশি হাসপাতালও লকডাউন থাকবে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ জানান, পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা পাওয়ার পর আক্রান্ত এলাকা লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আক্রান্তরা বেশিরভাগ সুস্থ রয়েছেন। তারা যদি হোম কোয়ারেন্টিনে থেকে চিকিৎসা নিতে চাইলে ব্যবস্থা করা হবে। আর তা নাহলে আমরা আইসোলেশনে রাখবো তাদের।
নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা বলেন, সকাল থেকেই পুরো জেলা লকডাউনে চলে যাবে। আগে থেকে পুলিশ আরও কঠোর হবে।
তিনি বলেন, আক্রান্ত শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ ছিলো না। অনেকের প্রাতিষ্ঠানিক এবং হোম কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ