টানা তিনবারের দেশসেরা ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজ পা রাখলো ১৪৭ বছরে। সোমবার কলেজের ১৪৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ব্যাপক আয়োজন করা হয়। বেলা ১১টায় কলেজ মাঠে বেলুন উড়িয়ে ও কেক কেটে দিবসটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান।
‘প্রমত্তা কালের খেয়ায় কাটলো যে দিন, পেরিয়ে বছর মাস শুভ জন্মদিনে আজ প্রাণের উল্লাস’ স্লোগানে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উৎসবে মেতে ওঠে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শুভাকাঙ্গীরা। পরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের নেতৃত্বে র্যালিটি নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কলেজ মাঠে শেষ হয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের মিষ্টিমুখ করানো হয়।
দিবসটি উপলক্ষে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমান ও উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আল-ফারুক চৌধুরী রাজশাহী কলেজ সংশ্লিষ্ট বর্তমান ও সাবেক প্রত্যেককেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তারা বলেন, রাজশাহী কলেজ ১৪৭ বছরে পদার্পণ করেছে। এই দীর্ঘ পথচলায় রাজশাহী কলেজ দেশের বিদ্যাঙ্গনে অনেক বড় অবদান রেখেছে। অনেক প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব তৈরী হয়েছে এই ক্যাম্পাসেই। টানা তিনবার দেশের সেরা কলেজের খেতাব অর্জনই পরিচয় বহন করে রাজশাহী কলেজের। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে এমন প্রত্যাশা করেন তারা।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রমত্তা পদ্মার পাশ ঘেঁষে অবস্থিত কলেজটি ঢাকা ও চট্টগ্রাম কলেজের পরে বাংলাদেশের তৃতীয় প্রাচীনতম কলেজ। ১৮৭৩ সালের পহেলা এপ্রিলে মাত্র ৬ জন ছাত্র নিয়ে যাত্রা শুরু করে কলেজটি। বর্তমানে প্রায় সাতাশ হাজার শিক্ষার্থীদের পাঠদানের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গ ও দেশের শিক্ষাঙ্গনে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে প্রাচীন এই বিদ্যাপিঠ।
১৪৬ বছরের দীর্ঘ পথ চলায় বিভিন্ন চড়াই উৎরায় পার হয়ে কলেজটি এখনও স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল। গতিশীল সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে রাজশাহী কলেজ নিজেকে রাঙ্গিয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়ায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২৮টি সূচকের ভিত্তিতে তিনবার দেশসেরার মুকুট অর্জন করেছে। এছাড়াও পেয়েছে ডিজিটাল কলেজের খেতাব।
প্রায় সাতাশ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখর ক্যাম্পাসটিতে ২৪ টি বিভাগে স্নাতক সম্মান, স্নাতকোত্তর, ডিগ্রি ও এইচ.এস.সি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করা হয়। বর্তমানে কলেজে ২৬০ জন কর্মঠ শিক্ষক কর্মরত আছেন।
আধুনিক প্রযুক্তির যুগে পিছিয়ে নেই রাজশাহী কলেজ। কলেজের নিরাপত্তার স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে স্থাপন করা হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। প্রতিটি বিভাগে চালু করা হয়েছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। শিক্ষকদের জন্য সরবরাহ করা হয়েছে প্রয়োজনীয় ল্যাপটপ। প্রতিটি বিভাগে রয়েছে সুদৃশ্য কম্পিউটার ল্যাব। ক্লাসের শিক্ষার্থীদের বহির্বিশ্বের সাথে সর্বদা যোগাযোগ রাখার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ফ্রি ওয়াই-ফাই সেবা।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ২৪